ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৩ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

ভুল চিকিৎসার অপবাদে চিকিৎসককে হয়রানির অভিযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪৩, জুলাই ২৫, ২০২৫
ভুল চিকিৎসার অপবাদে চিকিৎসককে হয়রানির অভিযোগ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ কসমেটিক সার্জারির চিফ কনসালট্যান্ট ডা. ইকবাল আহমেদ।

রাইনোপ্লাস্টি সার্জারিতে ভুল চিকিৎসা, আর্থিক প্রতারণা ও নাক বিকৃতির মিথ্যা অভিযোগে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ কসমেটিক সার্জারির চিফ কনসালট্যান্ট ডা. ইকবাল আহমেদ।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশেন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ইকবাল আহমেদ বলেন, গত ১৬ জুলাই ৩৭ বছর বয়সী সুমি আক্তার অভিযোগ করেন- রাইনোপ্লাস্টি সার্জারির পর তার নাক বাঁকা হয়ে গেছে, শক্ত হয়ে গেছে এবং অতিরিক্ত কেটে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও আনেন তিনি। অভিযোগটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করে বাংলাদেশের প্লাস্টিক সার্জন সোসাইটি এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যাসথেটিক প্লাস্টিক সার্জনস।  

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তদন্তে কোনো বিকৃতি বা মোটা অঙ্কের লেনদেনের প্রমাণ পায়নি সংস্থা দুটি। রাইনোপ্লাস্টির পর টিপপ্লাস্টি সার্জারিতে কিছুটা শক্ত অনুভূত হওয়া হিলিং প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক ধাপ। এটি জটিলতা নয়, সময়ের সঙ্গে ঠিক হয়ে যায়। অভিযোগে বলা হয়- নাকে সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট ঢোকানো হয়েছে, কিন্তু ডা. ইকবাল তা অস্বীকার করে বলেন, রোগী চাইলে এক্সরে বা সিটি স্ক্যান করালেই প্রমাণ হবে কোনো সিলিকন ব্যবহার হয়নি।

অভিযোগে ১১ লাখ টাকার লেনদেনের কথা উল্লেখ থাকলেও ডা. ইকবাল বলেন, সার্জারির মোট খরচ ছিল মাত্র ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, যার রশিদ ও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজসহ প্রমাণ তার কাছে রয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, রোগীর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল ৬ মে ২০২৪-এ এবং ডিসেম্বর মাসে সার্জারির তারিখ বুক করতে ৫ হাজার টাকা অগ্রিম দেন সুমি আক্তার।

গণমাধ্যমে মাস্ক পরে বক্তব্য দেওয়ার প্রসঙ্গে ডা. ইকবাল বলেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নাক ঢেকে রেখেছিলেন যেন কেউ বুঝতে না পারে কোনও বিকৃতি হয়নি। একবার যদি মাস্ক ছাড়া আসেন, সত্য পরিষ্কার হবে।

এ ছাড়া রোগীর আইনজীবীর বক্তব্যকে অপেশাদার মন্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, কসমেটিক সার্জারিকে বিকৃত চিকিৎসা বলা মানে এ পেশা এবং চিকিৎসা গ্রহণকারীদের অপমান করা।

ডা. ইকবাল বলেন, সার্জারির পর রোগী টাকা ফেরতের দাবি করলে তা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। এরপর হুমকি দিয়ে বলা হয় দ্বিগুণ টাকা দিতে হবে। তিনি দাবি করেন, এটি একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র।

তিনি আদালতের কাছে অনুরোধ বলেন, মামলাটি বিশেষজ্ঞ কমিটি বা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে পুনর্বিবেচনা করা হোক। একইসঙ্গে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন যাচাই করতে গণমাধ্যমকর্মীদের আমন্ত্রণ জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. ইকবালের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- প্রফেসর ডা. ইমরান চৌধুরী, বিভাগীয় প্রধান, প্লাস্টিক সার্জারি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ইসি মেম্বার এসপিএসবি ও লাইফ মেম্বার বিএসএপিএস, প্রফেসর ডা. সাত্তার মোহাম্মদ সুমন, বিভাগীয় প্রধান, প্লাস্টিক সার্জারি, মনোয়ারা সিকদার মেডিকেল কলেজ ও ডা. চৌধুরী রাশেদুল মুগনি, সহকারী অধ্যাপক, প্লাস্টিক সার্জারি, বিআইএইচএস।

টিএ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।