ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

গ্যালারিতে বসে দেখার দিন শেষ, খেলতে হবে: প্রবাসীদের ড. ইউনূস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:৪৯, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫
গ্যালারিতে বসে দেখার দিন শেষ, খেলতে হবে: প্রবাসীদের ড. ইউনূস নিউইয়র্কে ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিস’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

দেশ ও জাতি পুনর্গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ‘এনআরবি (নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি) কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিস’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফররত বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রবাসীরা বাংলাদেশের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের ফলে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন আমরা দেখছি তা এগিয়ে নিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

দেশ গঠনে সবার ভূমিকা থাকবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দূরে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখব এমন হবে না। গ্যালারিতে বসে দেখার দিন শেষ। আমরা এখন নিজেরা খেলব।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের দূরে থেকে শুধু দুঃখ প্রকাশ করা, হতাশা প্রকাশ করা—এটা তো বরাবরই করে যাচ্ছেন। এবার হতাশা এবং আতঙ্ক অনুভব না করে নিজেরা কীভাবে সম্পৃক্ত হতে পারেন, সেটা করতে হবে।

জাতিসংঘের এই সফরে রাজনৈতিক নেতারা যোগ দেওয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, উনারা আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে সম্মত হয়েছেন বলেই আমাদের আস্থা অনেক বেড়ে গেল।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটা একটা বড় বিষয় ছিল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে আনা। তারা সম্মত হবেন সেটা ভাবিনি। মনে হচ্ছিল একটা প্যাঁচ এখানে লাগবে। তবু ভাবলাম যে চেষ্টা তো করি। এটা অসম্ভব একটা জিনিস হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন একটি প্রেজেন্টেশন দেন, যেখানে তিনি জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর গত ১৫ মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি রেমিট্যান্সে ২১ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারি উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

আশিক চৌধুরী প্রবাসীদের অব্যাহত সহায়তা কামনা করেন এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনে ভোটদানের পদ্ধতি বর্ণনা করেন।

এ আয়োজনে ‘ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াসপোরা এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক একটি ইন্টারেক্টিভ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এটি সঞ্চালনা করেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলসহ তিনজন এতে অংশ নেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য-সচিব আখতার হোসেন অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জন্য তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে আবেগঘন বক্তব্য দেন।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ‘শেপিং টুমোরো: দ্য ফিউচার অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক আরেকটি প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন। এতে প্যানেলিস্ট হিসেবে এনসিপি নেতা তাসনিম জারা, বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির এবং জামায়াত নেতা নাকিবুর রহমান অংশ নেন।

এ আয়োজনে ‘শুভেচ্ছা’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা, যা প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা, নির্দেশনা এবং বিনিয়োগের সুযোগ প্রদানের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

এমইউএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ