ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

খাগড়াছড়িতে দুষ্কৃতকারীদের হামলায় ৩ জন নিহত, ১৩ সেনা ও ৩ পুলিশ আহত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪৬, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫
খাগড়াছড়িতে দুষ্কৃতকারীদের হামলায় ৩ জন নিহত, ১৩ সেনা ও ৩ পুলিশ আহত খাগড়াছড়িতে সংঘাতের সময় অগ্নিসংযোগ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায় সহিংসতা ও দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিনজন পাহাড়ি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মেজরসহ ১৩ সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিনজন পুলিশ সদস্য এবং আরও অনেকে।

এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ মর্মে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অতি শিগগির তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না।  

ততক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণপূর্বক শান্ত থাকার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।  

গুইমারায় সংঘর্ষ-সহিংসতা
খাগড়াছড়ি থেকে বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জানিয়েছেন, জেলার গুইমারায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সরকারি অফিস, দোকান ও বসতঘরে অগ্নিসংযোগের খবরও পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরের আগে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, গুইমারার রামসু বাজারের মুখে অবরোধের সমর্থনে সড়কে গাছের গুঁড়িতে আগুন দিয়ে পিকেটিং চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবরোধকারীদের সরে যেতে বললে এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সংঘর্ষে রূপ নেয়।

অবরোধকারীরা রামসু বাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে সমাজসেবা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বেশ কিছু অফিস, দোকান, বসতঘর, মোটরসাইকেল পুড়ে যায়।  

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ছোড়ে। রামসু বাজারের আশপাশের এলাকায়ও সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।  

গুইমারা থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি অনেকটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে লোকজনকে ১৪৪ ধারা মেনে চলতে বলা হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, আমি এসপিসহ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। ঘটনায় বেশ কয়েকজন হতাহত আছেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালায় এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা করেন।  

পরদিন সন্দেহভাজন যুবক শয়ন শীলকে আটক করে পুলিশ। অভিযুক্ত অন্য দুজনকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ কর্মসূূচি ডাকা হয়।  

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি শহরে অবরোধকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হন। তখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ছোড়ে।  

তার আগে গুইমারা ও খাগড়াছড়ি পৌরসভাসহ সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন, মোতায়েন করা হয় বিজিবি।

জিসিজি/এডি/আরএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।