ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সংবাদমাধ্যমকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৫
সংবাদমাধ্যমকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশের সংবাদমাধ্যম সব সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। ভবিষতেও একই ধারা অব্যাহত রাখবে।



শুক্রবার (০৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার ও গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
 
‘গণমাধ্যম গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র’ এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
 
তিনি বলেন, আমরা সত্যের পক্ষে ও মিথ্যার বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আমাদের সামনে কিছু আসলে সংবাদমাধ্যম নিরপেক্ষ হয়ে থাকতে পারে না।

‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কলম ধরতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থানের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। ’
 
ইকবাল সোবাহান চৌধুরী বলেন, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নিতে হবে। মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স দেখিয়েছেন, এই মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমকে জোরালো অবস্থান নিতে হবে। যুদ্ধাপরাধীরা মানুষ নয়, তারা পশু। তাদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে জাগ্রত করতে হবে। এক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমকেও যুদ্ধ করতে হবে।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা বলেন, জাতির জনককে হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে মিডিয়া সোচ্চার হতে থাকে। এরপর থেকে আরেক অধ্যায় শুরু হয়।
 
‘এরপর আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী এই বিচার কাজ চালিয়ে যাবেন। এতে বাধা দেওয়ার মতো পৃথিবীতে কোনো শক্তি নেই,’ বলেন, ইকবাল সোবহান।
 
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, সংবাদমাধ্যম ভূমিকা রাখছে বলে এখনও যুদ্ধাপরাধের বিচার চলছে। এরপরও সংবাদমাধ্যমকে আরও কাজ করার আছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক প‍ুর্নমূল্যায়ন, আত্মসমর্পণ করা ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীকে পাকিস্তান বিচার করেনি, তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে গণআদালতের মাধ্যমে বিচার করা এবং যে স্থানে ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিলে সেখানে স্তম্ভ নির্মাণ করার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে।
 
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থে ১৯৫জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে হবে। আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যম ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
 
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী স ম রেজাউল করিম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে কোনো নিরপেক্ষতার কথা বলা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে এক থাকতে হবে।
 
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের শুরু থেকে আমাদের সংবাদমাধ্যম বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশ করছে। এই বিচারকে স্বচ্ছ করার ক্ষেত্রে এটির ভূমিকা অনেক।
 
‘যুদ্ধাপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যম আমাদের সমালোচনাও করেছে। তবে এ সমালোচনার মাধ্যমে আমাদের অনেক কিছু শুধরে নিতে সাহায্য করেছে। ’
 
গোলবেটিল আলোচনায় সাংবাদিক সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার হওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেক গণমাধ্যমকর্মী যার যার জায়গা থেকে কাজ করেছে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে গণমাধ্যমকে নিরপেক্ষ থাকার জায়গা নেই।
 
তিনি বলেন, আমাদের বড় সমস্যা হলো- ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। আমাদের দেশে এই সিস্টেমটি এখনো উন্নত করা যায়নি। তথ্য অধিকার আইন করা হলেও এর সুফলতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অন্যদের মধ্যে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর আহমেদ পল্টু, কবি নাসির আহমেদ, সাংবাদিক কুদ্দুস আফ্রাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
 
** যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গণমাধ্যম সোচ্চার ভূমিকা রেখেছে

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৫
টিএইচ/ এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।