ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মানবতাবিরোধী অপরাধ

জাপা নেতা রেজাউল গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৫
জাপা নেতা রেজাউল গ্রেফতার

ময়মনসিংহ: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জাতীয় পার্টির নেতা একেএম রেজাউল হক ওরফে আক্কাস মৌলভীকে (৭০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চেচুয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার রেজাউল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আলবদর হিসেবে যুদ্ধাপরাধে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।



বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার চেচুয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল করিম গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

মুক্তাগাছা থানা সূত্র জানায়, রেজাউল হক ওরফে আক্কাস মৌলভীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে একাত্তরের হত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা রয়েছে। বুধবার দুপুরে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে বিকেলে তার গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

একেএম রেজাউল হক ওরফে আক্কাস মৌলভীর সঙ্গে একই মামলার অন্য সাত আসামির বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। তবে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তাদের নাম প্রকাশ করেননি প্রসিকিউশন।

মুক্তাগাছার পূর্বচেচুয়া গ্রামের মৃত মুসলেম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল হক ওরফে আক্কাস মৌলভী একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মাদ্রাসা ছাত্র থাকা অবস্থায় আলবদর বাহিনীতে যোগ দেন। সে সময় থানা আলবদর কমান্ডার সুরুজের নেতৃত্বে তিনি এবং স্থানীয় চানপুরের আলবদর ও রাজাকার বাহিনী দুর্ধর্ষ অপরাধ সংঘটিত করে।

গ্রেফতারকৃত প্রভাবশালী এ আলবদর নেতার বিরুদ্ধে সুবর্ণখিলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আলীসহ অপর এক মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, চেচুয়ায় হিন্দু বাড়িতে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ রয়েছে। হিন্দু বাড়ির সবাইকে তাড়িয়ে জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। স্বাধীনতার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান।

পরে নিজের নাম আক্কাস আলী পরিবর্তন করে এ এসএম রেজাউল হক লিখে পুন:নিবন্ধনের মাধ্যমে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর প্রকাশ্যে বের হয়ে আসেন তিনি।

মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি সাবেক স্পিকার মরহুম শামছুল হুদা চৌধুরীর হাত ধরে প্রথমে বিএনপি ও পরে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় হন রেজাউল। পরে তিনি চেচুয়া দাখিল মাদ্রাসায় সুপার ও মুক্তাগাছা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হন।

সর্বশেষ উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে উপজেলা জাপার সদস্য করা হয়।

তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত টিম দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত শেষে অভিযোগ দায়ের করেন। মানবতাবিরোধী এ অপরাধীর গ্রেফতারের খবরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৫
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।