শহীদ স্মৃতিসৌধ, মিরপুর থেকে: কিংবদন্তি ঔপন্যাসিক, গল্পকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা, শহীদ বুদ্ধিজীবী জহির রায়হানের নামে রাজধানীর মিরপুরের একটি সড়কের নামকরণ দাবিতে স্মৃতিসৌধে আসে ‘জহির রায়হান সড়ক বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে এ দাবি জানান তারা।
মিরপুরের পূরবী বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্ব দিকের কালশী সড়কটির নাম ‘জহির রায়হান সড়ক’ করার দাবি তোলেন তারা।
পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, স্বাধীনতা অর্জনে অপরিসীম ভূমিকায় জহির রায়হানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই এ দাবি। বাংলাদেশে তার নামে কোনো স্থাপনাও নেই।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ৩০ জানুয়ারি ভাই শহীদুল্লা কায়সারকে খুঁজতে মিরপুরের পল্লবীতে এসে নিখোঁজ হন তিনি।
কালশী সড়ককে প্রাধ্যান্য দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তারা বলেন, ধারণা করা হয় এই সড়কের আশপাশ থেকেই তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। নামকরণ হলে তার প্রতি যেমন শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে, তেমনি মিরপুরের মাটি ও মানুষ দায়মুক্ত হবে।
ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ক্যামেরা ঘুরে বেড়িয়েছে রণাঙ্গণ থেকে শরণার্থী শিবির। স্বাধীনতার পক্ষে প্রচার অভিযান ও তথ্যচিত্র নির্মাণ করে চরম অর্থনৈতিক দৈন্যের মধ্যেও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী থেকে প্রাপ্য অর্থ মুক্তিযোদ্ধাদের তহবিলে দান করেন।
১৯৭০ সালে ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ নামে ইংরেজি, বাংলা, উর্দু ও রুশ ভাষায় একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করলেও মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিলে তা অসমাপ্ত রয়ে যায়।
মুক্তিযুদ্ধের উপর প্রথম তথ্য চলচ্চিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’, দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘স্টেট ইজ বর্ন’সহ ‘চিলড্রেন অব বাংলাদেশ’, ‘স্যারেন্ডার’, ‘প্রতিশোধ’ প্রভৃতি তথ্যচিত্রের নির্মাতা জহির রায়হান।
বুদ্ধিজীবীদের বাংলাদেশ মুক্তি পরিষদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি।
ভাষা আন্দোলন ও পরবর্তীকালে অন্যান্য রাজনৈতিক আন্দোলনের উপর নির্মিত ‘জীবন থেকে নেওয়া’ চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি মাইল ফলক।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
এমআইএইচ/এমইউএম/এএ