ঢাকা: দেশে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণে শ্রমিকদের মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বেসরকারি সংস্থা সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিদায়ী বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় ৩৭৩ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
সেইফটি অ্যান্ড রাইটসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্মাণ খাতের পরে সেবা খাতে হতাহতের সংখ্যা সর্বাধিক। ২০১৫ সালে সেবামূলক খাতে নিহত ১০১ জন। আর নির্মাণ খাতে ১৪৭ জন, যা মোট নিহতের প্রায় ৪০ শতাংশ। এছাড়া উৎপাদন খাতে নিহত ৯৩ জন, কৃষিতে ৬ জন এবং পরিবহন খাতে নিহত হয়েছেন ২৬ জন শ্রমিক।
২০১৫ সালে সারাদেশে মোট ২৮২টি কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় ৩৭৩ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আর ২০১৪ সালে ২৭১টি কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় মোট ৩২০ জন নিহত হন।
জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১১০ জন। আগুনে পুড়ে মারা গেছেন ৩১ জন, ভারী বস্তুর আঘাত বা চাপায় ৪৭ জন, ছাদ বা মাচার ওপর থেকে পড়ে ৪৪ জন, ছাদ বা দেয়াল ধসে ২৩ জন এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক বা পানির ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে ২৩ জন শ্রমিক মারা গেছেন।
এছাড়া বয়লার বিস্ফোরণ, কেমিক্যাল, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, মেশিনে বা ফিতায় জড়িয়ে, সড়ক দুর্ঘটনায়, ভূমিধস, পানিতে ডুবে এবং বজ্রপাতে ৯৫ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
বেসরকারি সংস্থা সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি ২৬টি দৈনিক সংবাদপত্র (১৫টি জাতীয় ও ১১টি স্থানীয়) মনিটরিং করে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় শ্রমিকদের নিহতের সংখ্যার এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
জরিপ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অধিকাংশ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার না করার কারণে। বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ দেওয়ার সময়, মোটর চালু করার সময়, মাথার ওপরে বয়ে যাওয়া বিদ্যুতের লাইনের নিচে কাজ করতে গিয়ে বা নির্মাণ সাইটে লোহার রড নিয়ে কাজ করার সময় বিদ্যুতের লাইন স্পর্শ করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে রির্পোটে বলা হয়েছে, নিয়মানুযায়ী যথাযথভাবে মাচা তৈরি না করার ফলে মাচা ভেঙ্গে কিংবা মাচা থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত হন। এছাড়া বিকল্প বহির্গমনের ব্যবস্থা না থাকায় অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক মারা যান।
মালিক তথা শ্রমিকের মারাত্মক অবহেলার কারণেই কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের নিহতের সংখ্যা বাড়ছে বলে অভিযোগ সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৫
এফবি/আরআই/এএসআর