ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘কমিউনিটি পুলিশিং শুরু ময়মনসিংহ থেকে’

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৬
‘কমিউনিটি পুলিশিং শুরু ময়মনসিংহ থেকে’ ছবি- অনিক খান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ১৯৯৪ সাল, বিএনপি ক্ষমতায়। ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম‍ শহীদুল হক।

সে সময় ময়মনসিংহে হঠাৎ করেই বেড়ে যায় চুরি, ছিনতাই। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) আহমাদুল হক গঠন করেন টাউন ডিফেন্স পার্টি।

এটি মূলত কমিউনিটি পুলিশিংয়ের একটি অংশ। ওই সময়ই প্রথম শহরবাসীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পাড়া-মহল্লায় পাহাড়াদার নিয়োগ করা হয়।

স্থানীয় জনসাধারণই তাদের টাকা দিতেন। তাদের হাতে দেওয়া হয় টর্চলাইট, বর্শা। ঠিক সে সময়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম শহীদুল হক কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে কাজ শুরু করেন।

ময়মনসিংহ থেকে প্রাপ্ত কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ধারণা পরবর্তীতে গোটা দেশে এমনকি বিদেশেও ছড়িয়ে দেন এ কে এম শহীদুল হক।

বুধবার (০২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় নবনির্মিত পাগলা থানা ভবনের উদ্বোধন শেষে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী কমিউনিটি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব স্মৃতিচারণ করেন।

আইজিপি বলেন, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ এবং কমিউনিটির মধ্যে সম্পর্কের সেতুবন্ধন রচনার কাজটি তিনি ময়মনসিংহ থেকেই শুরু করেছিলেন।

প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ কল্যাণে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শহীদুল হক ১৯৮৪ সালের বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৬ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন।

তিনি পুলিশের মহাপরিদর্শক হয়েছেন আরো দুই বছর আগে। পুলিশের পেশাদারিত্বের মর্যাদা বাড়াতে অনেক প্রশংসনীয় কাজও করেছেন ইতোমধ্যে।

পুলিশের এ আইজিপিকে বলা হয় দেশে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার রূপকার।

এ দেশে কমিউনিটি পুলিশিং ধারণাকে স্থানীয় জনসাধারণের কাছে জনপ্রিয় করে তোলেন তিনিই। ময়মনসিংহ থেকেই তিনি কমিউনিটি পুলিশিং ধারণায় উদ্ধুদ্ধ হন।

কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে তার সঙ্গে আমিও কাজ করছি’ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
 
কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ এবং কমিউনিটির মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অপরাধ দমন ও উদঘাটন, জননিরাপত্তা বিধান এবং সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন এ ব্যবস্থার প্রবর্তক আইজিপি শহীদুল হক।

তিনি বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং একটি দর্শন, একটি ফিলোসফি। এ দর্শন গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে কাজ করেছি। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার টেকসই সমাধান সম্ভব। এক্ষেত্রে কমিউনিটি পুলিশিং ট্র্র্যাডিশনাল পুলিশিংয়ের চেয়েও উত্তম।

সমাবেশ শুরুর আগে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে অবদানের জন্য ২০১২ সালে আমেরিকার নিউজার্সি স্টেটের মেয়র আইজিপি শহীদুল হককে যে সম্মাননা প্রদান করেন তার ভিডিওচিত্র প্রদশন করা হয়।

এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে গান পরিবেশিত হয়- ‘জনতাই পুলিশ, পুলিশই জনতা, কমিউনিটি পুলিশিং মুক্তির বারতা’।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৬
এমএএএম/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।