ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মায়ানমারের সঙ্গে স্থবির সম্পর্কে গতি চায় ঢাকা

জেসমিন পাপড়ি, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৬
মায়ানমারের সঙ্গে স্থবির সম্পর্কে গতি চায় ঢাকা

ঢাকা: মায়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন গতি আনতে চায় ঢাকা।

দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতে একমত হয়ে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সম্পর্ক এগিয়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ করেই কিছুটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল।

ফলে উপকূলীয় জাহাজ চলাচল, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিসহ (পিটিএ) বিভিন্ন ইস্যুতে ঐক্যমত হয়েও সেসব বিষয় কার্যকর করতে পারেনি দুই দেশ।

এবার সে স্থবিরতা কাটিয়ে দেশটির সঙ্গে সম্পর্কে নতুন গতি আনতে আগ্রহী ঢাকা। দুই দেশের যৌথ বাণিজ্য কমিশনের (জেটিসি) আসন্ন বৈঠকের বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ নানা ইস্যুতে গতি আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতিও নিয়েছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব জানা গেছে।

২০১৪ সালে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে মায়ানমারের রাজধানী ন‍াইপিদোয় সপ্তম জেটিসি বৈঠকে যোগ দেয় বাংলাদেশ। পরের বছর (২০১৫ সালে) ঢাকায় অষ্টম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচন, নতুন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণসহ বিভিন্ন ব্যস্ততায় সময় দিতে পারেনি মায়ানমার।
 
দীর্ঘদিন পরে হলেও দুই দেশ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে।

আগামী ৯-১০ নভেম্বর ঢাকায় মায়ানমারের সঙ্গে অষ্টম জেটিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে- বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন। তার নেতৃত্বেই এ বৈঠকে অংশ নেবে বাংলাদেশ।

এ বৈঠক উপলক্ষে গত ২০ অক্টোবর বাণিজ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে দুই দেশের বাণিজ্য ৫০০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষে আসছে জেটিসে বৈঠকে সম্ভাব্য কৌশল ও উপায় নির্ধারণ করতে হবে বলে দুই দেশ একমত হয়। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে বাংলাদেশের রফতানি মাত্র ৩-৪ মিলিয়ন ডলার।

এর আগে মায়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) করার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। প্রস্তাবটিতে সমর্থনও দেয় নাইপিদো। লবণ আমদানি অবাধকরণ ও শুল্ক হ্রাসে মায়ানমারের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পিটিএ প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। এবারের বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত মতামত আসতে পারে।
 
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ পিটিএর আওতায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়টিকেত বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে।
 
এ ছাড়া দুদেশের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিওরস বা (এসওপি) এবং উপকূলীয় ও সামুদ্রিক জাহাজ চলাচল চলাচল বিষয়ক চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। সে লক্ষে মায়ানমারকে পোর্ট অব কল পরিদর্শনের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণও জানিয়েছে বাংলাদেশ। জেটিসি বৈঠকে এ বিষয়টিও বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে বলে জানা যায়।

মায়ানমার থেকে বিদ্যুৎ আনা, উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এমিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থা জনপ্রিয় করা, বাংলাদেশের বন্দরে মায়ানমারের পণ্য উঠানো-নামানোতে সুবিধা সম্প্রসারণ, পিটিএর আওতায় সুপারি, শুটকি, ইলিশের উপর আরোপিত শুল্ক হ্রাসকরণে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, সীমান্ত বাণিজ্য সংক্রান্ত সমস্যা চিহ্নিহতকরণ ও সমাধান, মৎস্য ও প্রাণী খাতে সহযোগিতা, কৃষি ও গবেষণা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ দ্বিপাক্ষিক আরো বিভিন্ন ইস্যু বৈঠকে স্থান পাবে বলে জানা গেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৪ ঘণ্টা,  নভেম্বর ০২, ২০১৬
জেপি/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।