ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মেরাদিয়া হাটে শীতের আমেজ

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
মেরাদিয়া হাটে শীতের আমেজ ছবি-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: হেমন্তের সবে শুরু, শীত আসতে এখনো বাকি। এরপরও ভোরের বাতাসে ঠাণ্ডা পরশ, সকালের মিষ্টি রোদ, সন্ধ্যায় হালকা কুয়াশা, ভোরের ঘাসের ডগায় জমা হওয়া শিশিরবিন্দু- সবই জানান দিচ্ছে শীতের আগমন বার্তা।

এ বার্তায় রাজধানীর ‘সাপ্তাহিক হাট’ মেরাদিয়ায় জমে উঠেছে শীতের বাজার। মেরাদিয়ার এ সাপ্তাহিক হাটটি রাজধানীবাসীর মাঝে বেশ জনপ্রিয়।

বুধবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এল‍াকার প্রাচীন মেরাদিয়া হাট ঘুরে দেখা গেছে, গা গরম করার পোশাকের পসরা নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। শীতের পোশাক কিনতে ব্যতিব্যস্ত ক্রেতারাও। হাটে পাওয়া যাচ্ছে কম্বল, ফুলহাতা সোয়েটার, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্যান্ডের ব্লেজার, ছোটদের ট্রাউজার, গেঞ্জি, প্যান্টসহ শীতের রং-বেরঙের বাহারি পোশাক। দামও যেমন হাতের নাগালে, তেমনি পণ্যের গুণগত মান নিয়েও কারো মনে প্রশ্ন নেই।

পোশাক বিক্রেতা আরমান আলী(৪২) বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত বুধবারের সাপ্তাহিক হাটেও শীতের পোশাক নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু বিক্রি কম ছিলো। আজ(বুধবার) বিক্রি অনেক ভালো। শীতের পোশাকের দামও হাতের নাগালে। এখানে আপনি ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিদেশি ব্র্যান্ডের পোশাক পাবেন। যেখানে শীতের একটি ভালো পোশাক নামকরা মার্কেটে কিনতে লাগবে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা, সেখানে একই পোশাক এখানে পাবেন ১ হাজার ৫০০ টাকায়’।

এয়ারপোর্ট থেকে ছোট সন্তানের জন্য শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন মেহরীন বেগম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখানে প্রতি সপ্তাহের বুধবারে পরিবারের বাজার/মার্কেট করতে আসি। গত সপ্তাহেও এসেছিলাম, কিন্তু শীতের পোশাক তেমন একটা পছন্দ হয়নি। আজ শীতের কিছু নতুন পোশাক ভালো লাগলো, তাই বাবুর জন্য কিনছি’।

তিনি বলেন, ‘সবকিছুর দাম এখানে কম। শীতে বাবুর জন্য একটি গেঞ্জি কিনলাম ৫৩০ টাকা দিয়ে। অথচ এই একই গেঞ্জি আপনি নামকরা কোনো শো’রুমে গেলে ২ হাজারের কমে কিনতে পারবেন না’।

মালিবাগ থেকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কাপড় কিনতে এসেছেন সাবরিনা আক্তার(৩৪)। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘শীতের হালকা হাওয়া জানান দিচ্ছে তার আগমন বার্তা। এজন্য পরিবারের সবাই মিলে এসেছি মার্কেট করতে। এ হাটে নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত সবাই কেনাকাটা করেন। এর কারণ, এখানে সারাদিন ঘুরে আপনি যা খুশি তাই কিনতে প‍ারবেন একই স্থানে। আর দাম সে তো হাতের নাগালেই। মায়ের জন্য একটি সোয়েটার কিনেছি ১ হাজার ৩০০ টাকায়। রাজধানীর কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মার্কেটে গেলে যার দাম পড়বে না হলেও ৪ হাজার টাকা’।

‘এখানে বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব ধরনের শীতের পোশাকসহ বিভিন্ন বাহারি পোশাক পাওয়া ‍যায়’।

বিক্রেতারা প্রতি বুধবার ভোর থেকে দলবেঁধে নৌকায় করে পণ্য নিয়ে হাজির হন মেরাদিয়া হাটে। ঝড়-বৃষ্টি-গরম যাই হোক না কেন, হাট বসবে- এটা নিশ্চিত। এখানে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যসামগ্রী পাওয়া যায়। শাক-সবজি থেকে শুরু করে ঘরের আসবাবপত্র, কাচের জিনিস, হাঁড়ি-পাতিল, বিছানার চাদর, নারীদের জামা-কাপড় সবই পাওয়া যায়।

তবে মেরাদিয়া হাট নারীদের পণ্যসামগ্রীর জন্য বিখ্যাত বলে হাটে সব সময় নারীদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।

বাংলাদেশ সময়: ০০২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
এসজে/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।