ঢাকা, বুধবার, ১ কার্তিক ১৪৩১, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রামেকে ভবন নির্মাণে বাঁশ, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
রামেকে ভবন নির্মাণে বাঁশ, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি গঠন ছবি-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনা তদন্তের জন্য নতুন কমিটি করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এই কমিটিতে ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত অধিদপ্তরের কোনো প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর বুধবার (০২ নভেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী। তার সঙ্গে আরও দু'জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই প্রতিনিধি‍দলে ছিলেন।

এছাড়া আলাদাভাবে ঘটনাটি নিয়ে অনুসন্ধানে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

এদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার রামেক হাসপাতালের পরিচালকের কাছে একটি ফ্যাক্স বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাতে নতুন করে একটি তদন্ত কমিটির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রণালয়ে  প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে।

রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক (ডিডি) তৌফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, এই নতুন তদন্ত কমিটিতে গণপূর্ত বিভাগের কোনো সদস্যকে না রাখতে বলা হয়েছে। তদন্তকাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতেই এ নিদের্শ দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, গণপূর্ত অধিদফতরের অধীনেই একজন ঠিকাদার ভবনটি নির্মাণ করেছেন। কাজেই তাদের প্রতিনিধি তদন্ত কমিটিতে থাকলে তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এ কারণে তাদের বাদ দিয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এর একজন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের একজন প্রকৌশলীকে নতুন কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হবে।

তবে কমিটির প্রধান হিসাবে রামেকের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোসাদ্দেক হোসেন থাকছেন।

অপরদিকে, বুধবার দুপুরে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান মুন্সী, ডিজাইন সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব ও অডিট অ্যান্ড মনিটরিং সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শামসুল হক রামেক হাসপাতালের নতুন ওই ভবন পরিদর্শনে যান।

পরিদর্শন শেষে প্রধান প্রকৌশলী সাংবাদিকদের বলেন, এটা ভবনের মূল কাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো অংশ না। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এই ক্ষেত্রে কেউ কেউ দামি কাঠ ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এটি যেহেতু সরকারি ভবন এবং বেশি ব্যবহার হয়, সেখানে স্টিলের পাত বা অন্যকিছু দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, মন্ত্রী তাকে আসতে বলেছেন। তিনি এসেছেন, এখানে কারও যদি কোনো ‘ফল্ট’ থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে, ভবন নির্মাণে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আব্দুল আজিজ ভূঁইয়াও বুধবার ওই ভবন পরিদর্শন করেছেন।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, দুদকের চেয়ারম্যানের কার্যালয় থেকে নির্দেশিত হয়ে তারা এ ব্যাপারে অনুসন্ধানে নামছেন। আগামী রোববার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা ঘটনাটি তদন্তের কাজ শুরু করবেন।

এর আগে গত সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রামেক হাসপাতালের তৃতীয় তলার লিফটের সামনে টাইলস সরে গেলে তার নিচে বাঁশ দেখা যায়। এরপর বাংলানিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

পরের দিন রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে। ওই কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

২০১২ সালের ১৭ জুলাই রামেক হাসপাতালে ৫শ’ হাজার শয্যার নতুন ভবনটির উদ্বোধন করা হয়। এতে হাসপাতালের মোট শয্যা সংখ্যা দাঁড়ায় এক হাজার ৩০টিতে। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ৩০ কোটি টাকা। ‍

চারতলা এ ভবনটি নির্মাণ করা হয় রামেক হাসপাতালের পুরনো ভবনগুলোর ঠিক মাঝখানে। সেই ভবনের তিনতলার লিফটের সামনে এই বাঁশ পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
এসএস/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।