ঢাকা, বুধবার, ১ কার্তিক ১৪৩১, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এয়ার এশিয়ায় হয়রানি ধামাচাপার অপচেষ্টা ও বাংলানিউজের বক্তব্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
এয়ার এশিয়ায় হয়রানি ধামাচাপার অপচেষ্টা ও বাংলানিউজের বক্তব্য

ঢাকা: বাজেট এয়ারলাইন্স হিসেবে নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষ। যে কোনো মূল্যে তারা ধামাচাপা দিতে চাইছে যাত্রী হয়রানির ন্যক্কারজনক নজির।

আর তাদের এই অপকর্মে আরো কয়েক কাঠি সরেস ভূমিকা নিয়েছে এয়ারলাইন্সটির ঢাকা এজেন্সি টোটাল এয়ার সার্ভিসেস লিমিটেড। নিজেদের সাধু সাজিয়ে উল্টো তারা যাত্রীদেরই দুষছে। আরো দোষ চাপাচ্ছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ওপরও।

এমনকি তাদের যাত্রী হয়রানিসহ অন্যান্য অনিয়ম নিয়ে করা রিপোর্টকেও ভালো চোখে দেখছে না তারা। এ বিষয়ে মিডিয়ার সঙ্গে তাদের আচরণ অনেকটাই প্রভূসুলভ।  

গত ২০ মার্চ (২০১৬) বাংলানিউজে প্রকাশিত ‘ফ্লাইটে হকারি, এয়ার এশিয়ায় দুঃসহ ভ্রমণ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে টোটাল এয়ার সার্ভিসেস মহাব্যবস্থাপক বিভূতি ভূষণ বড়ুয়া বাজেট এয়ারের দোহাই দিয়ে বলেছেন, ‘প্রতিটি আর্ন্তজাতিক এয়ারলাইন্সের প্রতিটি ফ্লাইটে শুল্কমুক্ত বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী বিক্রি হয়। ’

বাংলানিউজের বক্তব্য
বাংলানিউজের সংবাদে বলা হয়েছিল, যাত্রীদের অভিযোগ, ফ্লাইটের ভেতর খাবার বিক্রি চলে হকারের মতোন। এরপর চকলেট-বিস্কুট কয়েক রাউন্ডে। এর মাঝে মাঝে এয়ার এশিয়ার সুভ্যেনির বিক্রি হয়। কেবিন ক্রুরা হকারের মতোই কাঁধে নিয়ে বিক্রি করেন ঘড়ি, নেল কাটার, কলম, টর্চ লাইট থেকে শুরু করে হরেক পণ্য। দেখে মনে হয়, পুরো এয়ারক্র্যাফটই যেনো উড়ন্ত বাজার হয়ে গেছে।

কিন্তু আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সে শুল্কমুক্ত সামগ্রী বিক্রি হয় মেন্যুর মাধ্যমে। পণ্য কাঁধে নিয়ে ঘোরেন না এয়ারলাইন্স স্টাফরা। যেটা এয়ার এশিয়ায় নিত্যকার দৃশ্য হয়ে উঠেছে।

এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রীদের সুবিধার্থে তারা ফ্লাইটে খাবার বিক্রি করেন। কিন্তু বাংলানিউজের সংবাদে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় অনেক যাত্রীই এজেন্টের মাধ্যমে টিকেট কেনার কারণে খাবারের অর্ডার সম্পর্কে অবগত থাকেন না।

গত ৮ অক্টোবর (২০১৬) ‘এয়ার এশিয়ার ঢাকা রুটে রাক্ষুসে ভাড়া’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে ঢাকা এয়ারপোর্টে হ্যান্ডেলিং চার্জকে দোষারোপ করা হয়েছে। কলকাতার সঙ্গে এর তুলনা চলেনা বলেও দাবি করা হয়েছে।

বাংলানিউজের বক্তব্য
বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের অফারে সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া রাখা হয়েছে। কিন্তু শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে হ্যান্ডেলিং চার্জ ৬ হাজার ৪০০ টাকা। যেখানে এয়ার এশিয়া ভাড়া নিচ্ছে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

এছাড়াও এয়ার এশিয়ায় আন্তর্জাতিক অন্য সব রুটে অগ্রীম টিকিটের জন্যে ভাড়া কম থাকলেও, ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ভাড়া সবসময়ই বেশি।
 

গত ২৫ অক্টোবর (২০১৬) ‘যাত্রীদের পানিও দেয় না এয়ার এশিয়া’ শিরোনামে সংবাদের বিষয়ে টোটাল এয়ার সার্ভিস বলছে,  একজন যাত্রীও এ যাবৎকালে এ ধরনের পর্যবেক্ষণ দেননি।

এছাড়াও ‌যাত্রীর পরিচয়ের বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘সঠিক ফেসবুক আইডি নয় বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ’

বাংলানিউজের বক্তব্য
এয়ারলাইন্সরেটিং.কম এ পেরিক্লিস এবং ক্যারোলিনের অভিযোগের স্ক্রিনশটসহ সংবাদটি প্রকাশ করা হয়।

একই দিনে প্রকাশিত ‘নেভার এগেইন এয়ার লেইট এশিয়ায়’ সংবাদের বিষয়েও ফেসবুক আইডি'র প্রশ্ন তুলেছে কর্তৃপক্ষ।

অথচ বাংলানিউজের সংবাদে ফেসবুকের কোন কথাই উল্লেখ করা হয়নি। এ সংবাদের ক্ষেত্রেও এয়ারলাইন্সরেটিং.কম এ যাত্রীদের অভিযোগের স্ক্রিনশট দেয়া হয়েছে।

এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের মতামত দেয়ার জন্যে আন্তর্জাতিকভাবে খুবই স্বীকৃত একটি ওয়েবসাইট এয়ারলাইন্সরেটিংস.কম। যেখানে সম্পাদকপর্ষদই যাত্রীদের অভিযোগগুলোর জবাব দিয়ে থাকেন।

৩০ অক্টোবর (২০১৬)  ‘এয়ার এশিয়ায় গেলেই হেনস্তা, ফেরত পাঠানো হয় যাত্রীদের’ শীর্ষক খবরের প্রতিবাদে কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের দোষারোপ করেছে এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষ।

তারা বলছে, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন বিশেষভাবে সতর্ক ও সক্রিয় অবস্থায় আছে এবং সন্দেহজনক যাত্রীদের বেলায় তারা নীতিমালা অনুযায়ী তাদের ভ্রমণের সপক্ষে বৈধ কাগজ-পত্রাদি যাচাই-বাছাই করে থাকেন।

বাংলানিউজের বক্তব্য
কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট-২ (কেএলআইএ-২) এ ইমিগ্রেশনের মূল ডেস্কে যাওয়ার আগেই বাংলাদেশি যাত্রীদের লাইন ধরিয়ে অপদস্ত করা হয় বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা থেকে পরিচালিত এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে শুধু এয়ার এশিয়াই এই ‘সমালোচিত বিমানবন্দরে’ ডিপারচার করে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।