ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নতুনবাজারে যানজটের মূল কারণ ইউটার্ন

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
নতুনবাজারে যানজটের মূল কারণ ইউটার্ন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: নতুনবাজারে যানজট সৃষ্টির মূল কারণ ইউটার্ন। কেননা নতুনবাজার ফুটওভার ব্রিজ সংলগ্ন ক্রসিংটি ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ফলে প্রতি দশ মিনিট পর-পর আমেরিকান ট্রেনিং সেন্টারের সামনের ইউটার্নে এসে মোড় নিচ্ছে গাড়িগুলো। আর এই ইউটার্ন নেওয়ার কারণে ‍একদিকে নর্দ্দা, অন্যদিকে উত্তরবাড্ডা পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সেই যানজট দেখা যাচ্ছে আমেরিকান ট্রেনিং সেন্টারের অপরপাশের রোড থেকে লিংকরোড পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) নতুনবাজারে সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত অবস্থান করে দেখা যায়, ঢাকা চাকা, আকিক, জাবালে নূর, রবরব, বিহঙ্গ ও স্টার লিংক পরিবহনগুলো মিনিট দশেক পরপর ইউটার্ন নিচ্ছে।

এতে অন্যপাশের রাস্তা বন্ধ রাখতে হচ্ছে এবং যে রাস্তা থেকে গাড়িগুলো মোড় নিচ্ছে তার পেছনের গাড়িগুলোও যেতে পারছে না। তাই এসব গাড়ি ইউটার্ন নেওয়ার ফলে নতুনবাজারের যানজটকে আরও বেশি বাড়িয়ে তুলছে। এছাড়া নতুনবাজার রাস্তাটি কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মালিবাগ, নতুনবাজার থেকে গুলশান-২, বনানী ও নতুনবাজার থেকে মিরপুরগামী একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।

আর নতুনবাজার ভাটারা থানার পাশ দিয়ে চলে গেছে ১০০ ফুট রাস্তা। যে রাস্তাটি বেরাইদ-জগন্নাথপুর এলাকায় গিয়ে মিশেছে। কিন্তু ইউটার্নের কারণে সৃষ্ট এখানকার যানজট লেগে থাকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। ফলে সকালে নতুনবাজারে সৃষ্ট যানজটে কর্মব্যস্ত, অফিসগামী ও শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।

শুধু তাই নয়, আগে ফুটওভারব্রিজের নিচের ক্রসিংটি থাকার কারণে বনানী-গুলশান থেকে আসা গাড়িগুলো সহজে ভাটারা ও বাড্ডা চলে যেত পারতো। সম্প্রতি ক্রসিংটি বন্ধ থাকার কারণে গুলশান ও বনানী থেকে আসা গাড়িগুলো সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে ঘুরে আসতে হয়। আবার গুলশান রোডেও যানজট লেগে থাকে। কিন্তু বর্তমানে চারপাশের যানজট নিরসনের জন্য ক্রসিংটির মাঝে স্টিলের প্লেট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আমেরিকান ট্রেনিং সেন্টারের সামনে থেকে ঢাকা চাকা, বন্ধু পরিবহন, আকিক, জাবালে নূর, নূর-ই মক্কা, রবরব, বিহঙ্গ ও স্টার লিংক পরিবহনগুলো যখন ইউটার্ন নিচ্ছে, তখন পিছনে আটকা পড়ছে অসংখ্য প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস।

যাত্রীবাহী বাস গ্রেট তুরাগ, অনাবিল সুপার, বন্ধু পরিবহন, স‍ুপ্রভাত সিটিং সার্ভিস, অছিম পরিবহন, প্রচেষ্টা পরিবহন, ফাল্গুন, বৈশাখী, নূর-ই-মক্কা, উইনারসহ অসংখ্য পরিবহন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। যা নতুনবাজার, প্রগতি সরণি রুটে যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুনবাজারের যে ক্রসিংটি এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেটির সঙ্গেই ফুটওভার ব্রিজ। কিন্তু পথচারীরা ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কের ওপর দিয়েই রাস্তা পার হচ্ছেন। ফলে দ্রুতগামী গাড়িগুলোকে তার গতি কমিয়ে রাস্তা পর হতে পথচারীদের সাহায্য করতে হচ্ছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

নতুনবাজার যানজটে আটকা পড়া বিষয়ে সুপ্রভাত সিটিং সার্ভিসের সুপারভাইজার আলামিন বাংলানিউজকে বলেন, সামনের ইউটার্ন থেকে বিভিন্ন গাড়ি মোড় নেয়। এর জন্য পিছনের গাড়িগুলোকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আর এতে দেখা যায় যানজট।

আমেরিকান ট্রেনিং সেন্টারের সামনে থেকে ইউটার্ন নেওয়া ঢাকা চাকা’র এর হেলপার আসলাম বলেন, এখান থেকে ছাড়া ইউটার্ন নেওয়ার মত সামনে আর কোনো ক্রসিং নেই। তাই এখান থেকে ইউটার্ন নেওয়া হয়। এজন্য পিছনে অনেক যানজটেরও সৃষ্টি হয়। কিন্তু তাদেরও কিছু করার নাই।

বৈশাখী পরিবহনের যাত্রী রাশেদুল ইসলাম যানজট সম্পর্কে বাংলানিউজকে বলেন, যানজটের জন্য আমরাই দায়ী। কেননা আমদের মধ্যে কোনো দায়িত্ববোধ নেই।  

নতুনবাজার আমেরিকান ট্রেনিং সেন্টারের সামনে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, এখান থেকে অধিকাংশ গাড়ি মোড় নিয়ে গুলশান, বনানী ও মিরপুর যাচ্ছে। আর সামনে থেকে ঘুরতে গেলেও যানজটের মাত্রা আরও বেশি বেড়ে যাবে। এজন্য গাড়িগুলো এখান থেকে ইউটার্ন নিচ্ছে।

যানজট নিরসনে তাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
এসজে/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।