ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কৃষকের মনোযোগ আলু চাষে

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
কৃষকের মনোযোগ আলু চাষে ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: মুখ ভর্তি সাদা দাড়ি-গোফ। মাথায় বিশেষ কায়দায় মোড়ানো গামছা।

শরীরটা যেন রোদে পুড়ে কালচে বর্ণ ধারণ করেছে। মুখমণ্ডলে পড়া ভাঁজের চিহ্ন থেকে বয়সটাও অনুমেয়। এরপরও বসে থাকার উপায় নেই। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিনিয়ত মাঠে ছুটতে হয় আজাহারকে।

কারণ তিনি তো একজন ‍কৃষক। অন্য কোন পেশা জানা নেই তার। ফসল ফলিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাকে। কিছুদিন আগেও ধান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।

এখন সেই কৃষকের সব মনোযোগ আলু চাষে। কাকডাকা সকাল থেকে দিনের সিংহভাগ সময় ক্ষেতে তার মত হাজারো কৃষক আলু লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বগুড়ার বেশ কয়েকটি উপজেলা ঘুরে কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হলে চলতি মৌসুমের আলু চাষ সম্পর্কে এমন তথ্য উঠে আসে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আলু চাষে কৃষকের কর্মব্যস্ততা। আলুর জমিতে গভীর চাষের প্রয়োজন। তাই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাওয়ার টিলারে বসে জমি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেক কৃষক। আবার অনেকেই সেই জমি সমান করছেন মই দিয়ে। সেক্ষেত্রে পাওয়ার টিলারও ব্যবহার করছেন অনেক কৃষক।  

আলুর বীজ লাগানোর জন্য সারিবদ্দ গর্তের সৃষ্টি করতে কৃষকরা হাত লাঙ্গল ও কোদাল ব্যবহার করছেন। সঙ্গে প্রয়োজন মতো জমিতে জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে। আলু লাগানোর জন্য এভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে জমি।

 

এরপর চলছে আলু লাগানোর কাজ। গামলা বা বাঁশের ঝুড়ি ভর্তি আলু নিয়ে কৃষকরা গর্তের মাঝে সেই আলু সারিবদ্দভাবে রোপণ করছেন। পরে তা মাটি দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন।

 

মোজাহার আলী, আব্দুল জব্বার, আবু সাঈদসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, আলু চাষের জন্য তারা জমিতে আগাম জাতের ধান লাগিয়েছিলেন। প্রায় মাসখানেক আগে ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ শেষ করে ফেলেন। এরপর থেকে আলু লাগাতে জমি প্রস্তুতের কাজে নেমে পড়েন তারা। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে তারা জমিতে আলু লাগানোর কাজ শেষ করেছেন।  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় চলতি মৌসুমে ৬১হাজার ৯শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে উফশী ৪২হাজার ৬শ’ হেক্টর ও স্থানীয় ১৯হাজার ৩শ’ হেক্টর।

বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) পর্যন্ত এ জেলায় মোট প্রায় ৪হাজার হেক্টর জমিতে আলু লাগানো হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে উফশী ও স্থানীয় জাতের আলু।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, জেলা সদর, শিবগঞ্জ, গাবতলী, শাজাহানপুর, শেরপুর, ধুনট, নন্দীগ্রাম উপজেলায় আলু লাগানো শুরু হয়েছে।

গত ০১ অক্টোবর থেকে এসব উপজেলায় কৃষকরা আলুর জমি প্রস্তুতির কাজ শুরু করেন। নভেম্বর মাস জুড়ে আলু লাগানো যাবে। তবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে আলু লাগানো ভালো। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে কৃষকরা এ ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলেও জানান কৃষিবিদ আব্দুর রহিম।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
এমবিএইচ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।