ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের সরে আসা উচিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের সরে আসা উচিত

ঢাকা: একদিকে তামাকজনিত মৃত্যু ও ভয়াবহতা কমিয়ে আনতে তামাক নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ অন্যদিকে তামাক কোম্পানিতে সরকারের অংশীদারিত্ব, দুটি বিষয় পারস্পরিক সাংঘর্ষিক।

তাই সরকারের জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের সদিচ্ছাকে বিতর্কমুক্ত ও তামাক কোম্পানিকে শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করতে তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার ও সরকারি প্রতিনিধি প্রত্যাহার করা উচিত।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট আয়োজিত সংস্থার নিজস্ব কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

মতবিনিময় সভার প্রতিপাদ্য ছিল ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাক কোম্পানির প্রভাব প্রতিহত করতে এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা’।

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন- হেলথ ব্রিজ এর আঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরইমসন, ত্রৈমাসিক পত্রিকা সমস্বর’র নির্বাহী সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুজন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মারুফ হোসাইন, জনস্বার্থ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডিএম সাকলায়েন, মিডিয়া অ্যাডভোকেসি অফিসার সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন প্রমুখ।

এতে যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের গবেষণা ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও গবেষণার আলোকে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সহকারী সচিব মাহমুদুল হক মনি।

মাহমুদুল হক মনি বলেন, বিশ্বব্যাপী সব ধরনের তামাকের ব্যবহার সীমিত ও নীতি প্রণয়ণের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) শিরোনামে আন্তর্জাতিক চুক্তি ২০০৩ সালে চূড়ান্ত হয়। এতে তামাকের উৎপাদন, বিক্রয়, বিতরণ, বিজ্ঞাপন প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ ও কর বৃদ্ধিসহ তামাক নিয়ন্ত্রণের অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। জাতিসংঘের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত স্বাক্ষরিত এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ বাংলাদেশ।
 
তিনি আরও বলেন, তামাক কোম্পানির সঙ্গে সরকারের আলোচনা কেন ও কিভাবে দায়বদ্ধ-স্বচ্ছ ও প্রকাশ্য করতে হবে এবং তামাক কোম্পানির কোনো কর্মসূচিতে কেন সরকারি প্রতিনিধি/কর্মকর্তারা অংশ নেবেন না সে সম্পর্কে এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৫.৩- তে বর্ণনা করা হয়েছে।

দেবরা ইফরইমসন বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অনেক সাফল্য রয়েছে। তবু তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালায়। এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে দেখা গেছে, কর ও মূল্য বাড়লে তামাকের ব্যবহার কমে আসে। কিন্তু বাংলাদেশে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি আশানুরূপভাবে বাড়েনি। এছাড়া কর কাঠামোর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো কর ফাঁকিও দিচ্ছে।
 
সমস্বর এর নির্বাহী সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, সরকার জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) কোম্পানির মতো ধূর্ত তামাক কোম্পানিতে সরকারের প্রতিনিধি থাকায় সরকারের নৈতিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

এজন্য তামাক কোম্পানি থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার বা নৈতিকতার স্বার্থে সরকারি কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছায় সরে আসা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা নভেম্বর ০৩,২০১৬
এমসি/জিপি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।