ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আখের অভাবে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে উৎপাদন বন্ধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৬
আখের অভাবে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে উৎপাদন বন্ধ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নাটোর: নাটোরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে সরবারাহকৃত আখের মূল্য পরিশোধ না করায় আখ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন কৃষকরা। ফলে আখের অভাবে মিলে চিনি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে মিলে আখ মাড়াই বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে সকাল থেকেই মিলে আখ সরবরাহ বন্ধ করে দেন কৃষকরা।

এ ঘটনা নিরসনে কৃষকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন মিল কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে কৃষকরা মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতি ও ই-পুর্জির ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে আগের পদ্ধতি চালুসহ আখের মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানান।

এছাড়া মিলের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেন কৃষকেরা। মাইকিং করেও আখের মূল্য পরিশোধ না করায় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে কৃষকরা সাফ জানিয়ে দেন মিল কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আখ সরবরাহ বন্ধ রাখবেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আজিজ, কৃষক হেলাল উদ্দিন, কবির উদ্দিন, কুদরত আলী, মোশারফ হোসেন, মোজাম্মেল হকসহ মিল কর্মকর্তারা।

কৃষক কবির উদ্দিন, কুদরত আলী, মোশারফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিতে যথা সময়ে আখের মূল্য পরিশোধের কথা বলা হলেও তারা সময় মতো টাকা পাচ্ছেন না। ই-পুর্জি প্রাপ্তিতেও রয়েছে নানা ভোগান্তি। পাওয়ার ক্রাশাড়েও মিল কর্তৃপক্ষ আখ মাড়াই কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

এ অবস্থায় তারা আখ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। সময় মতো আখ বিক্রি করতে না পারলে নির্ঘাত ক্ষতির সন্মুখীন হতে হবে তাদের।

উত্তরবঙ্গ আখচাষি সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল বাংলানিউজকে জানান, চিনির দাম তিন দফা বাড়িয়ে ৬০ টাকা কেজি দর নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ আখের মূল্য বাড়ানো হয়নি।

মিল চালু হওয়ার আগে থেকেই তারা নূন্যতম ১৫০ টাকা মন করার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু সেটা করা হয়নি।   ই-পুর্জি ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে কৃষকদের হয়রানি করা হচ্ছে। মিলে আখ সরবরাহ করার পরও তারা যথাসময়ে টাকা পাচ্ছেন না। এজন্য কৃষকরা আখ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন।

এদিকে, মিল সূত্র জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে ১৪৭ কার্য দিবসে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ২০ হাজার ৬২৫ মেটিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২৮ অক্টোবর মিলে আখ মাড়াই শুরু  হয়েছে। মিলে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৪৫০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়েছে।

নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আব্দুল আজিজ বাংলানিউজকে জানান, কৃষকরা মিলে আখ সরবারাহ না করে অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশাড়ে আখ মাড়াই করতে চায়। তারা মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতির পরিবর্তে সনাতন পদ্ধতিতে আখের মূল্য পরিশোধের দাবি জানানোর অজুহাতে আখ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। এজন্য সাময়িকভাবে মিলে চিনি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কৃষককদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে, শিগগিরই এর সমাধান হয়ে হবে। এরপর পুনরায় মিল চালু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৬
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।