ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফসলের ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৬
ফসলের ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ধুনট (বগুড়া): মাঠের বুক জুড়ে সবুজের সমারোহ। চাষ হয়েছে নানা জাতের সবজি।

কৃষকের খেতে শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, পটল, মরিচ, টমেটো, লাউ, করল্লাসহ নানা জাতের সবজি।

কিন্তু সবজি চাষ করে স্বস্তিতে নেই কৃষক। প্রতিকূল আবহওয়ায় নানা রোগ বালাইয়ের আক্রমণ হচ্ছে সবজি খেতে। পাতা কুকড়ানো, গাছে পচন, শিকড় মরে যাওয়া, গাছের বিবর্ণ রং, ফুল ও ফল ঝরে পড়াসহ নানা ধরনের রোগ। কীটনাশক প্রয়োগ করেও নিরাময় হচ্ছে না রোগ বালাইয়ের। তাই ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকের দিন কাটছে চিন্তায়।

এদিকে, সবজি চাষে কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে নতুন একটি উদ্যোগ নিয়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম। তিনি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় কৃষকের জন্য চালু করেছেন ‘ভ্রাম্যমাণ ডিজিটাল ফসল ক্লিনিক’ নামে কৃষিবান্ধব চিকিৎসাসেবা।

স্থানীয়রা জানান, ধুনট উপজেলার ২৫ হাজার কৃষক ২ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি চাষ করেছেন। মৌসুমের শুরু থেকেই নানা রোগ বালাই ধরেছে সবজি খেতে। হাট বাজার থেকে নানা ধরনের কীটনাশক কিনে সবজি খেতে প্রয়োগ করেও ফল পাচ্ছেন না তারা।  

এ কারণে উপজেলার বিশ্বহরিগাছা বাজারে ২৭ অক্টোবর এই ক্লিনিকের উদ্বোধন করেন কৃষি বিভাগ। ওই দিন প্রায় এক হাজার কৃষককে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। তারই ধারাবাহিকতায় ২ নভেম্বর দিনব্যাপী নিমগাছি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। সেখানে প্রায় দেড় হাজার কৃষককে কৃষি বিষয়ক পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়।

ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা নান্দিয়ারপাড়া গ্রামের হাফিজার রহমান বলেন, আমি ২০ শতক জমিতে মরিচ চাষ করেছি। কিন্তু সেই গাছের শিকড়ে পচন ধরে গাছ মারা যাচ্ছে। বিনামূল্যে ক্লিনিকের কর্মকর্তারা ব্যবস্থাপত্রসহ পরামর্শ দিয়েছেন।

মাঝবাড়ি গ্রামের মোতাহার হোসেন, বালুয়া গ্রামের গেন্দা প্রামাণিক, বড়চাপড়া গ্রামের দুলাল মিয়াসহ আরো অনেকে আসেন মরিচ, বেগুন, পটল, মূলা, করল্লা, লাউসহ নানা জাতের সবজির রোগবালাই দমনের পরামর্শের জন্য।

তারা বলেন, এর আগে এমন করে কোন কর্মকর্তা ফসলের চিকিৎসা দিতে গ্রামে আসেননি। এ উদ্যোগ আমাদের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনবে। আগে গ্রাম থেকে কৃষি অফিসে গিয়ে পরামর্শ নিতে হয়েছে। এখন গ্রামে এসে কৃষককে ফসলের বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

উপজেলার বেড়েরবাড়ি গ্রামের রাজু আহম্মেদ বলেন, এই ক্লিনিক থেকে হেল্প লাইনে (১৬১২৩) মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কৃষি পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ধরনের সেবা আগে কখনও পাওয়া যায়নি।

ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলার ২৫ হাজার কৃষককে ঘরে ঘরে গিয়ে কৃষি বিষয়ক পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই ইউনিয়ন পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকের মাধ্যমে ফসলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ক্লিনিকে এসে ফসলের চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ গ্রহণে কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে বলে জানান তিনি।        

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।