ঢাকা, সোমবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিরাপত্তাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা সদস্যরা হতবাক!

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৬
নিরাপত্তাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা সদস্যরা হতবাক! ছবি: কাশেম হারুন- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এসআই (উপ পদির্শক) মকবুল হোসেন। আর্মড পুলিশের এ কর্মকর্তা পাঁচ মাস আগে রাঙ্গামাটি থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় এসেছেন।

সেই থেকে দায়িত্ব পালন করছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে।

রোববার (০৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৩ টায় বিমান বন্দরে ঢোকার সময় প্রথম চেকপোস্টেই মকবুল হোসেন নেতৃত্বাধীন আর্মড পুলিশ সদস্যরা থামিয়ে দেন গাড়ি।

গাড়ির সামনে স্টিকার লাগানো, গলায় ঝুলানো আইডি কার্ড, হাতে ক্যামেরা। তার পরও ছাড় পাওয়া গেল না মকবুল হোসেন এবং তার সহকর্মীদের হাত থেকে।

তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন দিলেন। ওয়ার্লেসে ভেসে আসল- সাংবাদিক হলেও ভালো মতো চেক করে ঢুকতে দিন।
 
অতঃপর সিটের পেছনে, সিটের নিচে, চালকের আসন, আসনের নিচে- গাড়ির সব জায়গা তন্ন তন্ন করে তল্লাশি শেষে বিমান বন্দরে ঢুকতে দিলেন। সঙ্গে শর্ত জুড়ে দিলেন ক্যানোপির বাইরে অর্থাৎ গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা পযর্ন্ত কেবল যাওয়া যাবে। টার্মিনাল বা ক্যানোপির ভেতর প্রবেশ করা যাবে না। কোনো মতেই না।

অত্যন্ত বিনয়ী, সদালাপি, হাসি-খুশি, সহযোগিতা করার মনমানসিকতা সম্পন্ন এস আই মকবুল হোসেন তার উপর অর্পিত দায়িত পালন শেষে গাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার আগ মুহূর্তে বার বার বলছিলেন, আমরা সাধারণত সাংবাদিকদের গাড়ি তল্লাশি করি না।

কিন্ত রোববার একটা ঘটনা ঘটে গেছে তাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। আপনারা কিছু মনে করবেন না। ভেতরে যান। ঘুরে-ঘারে দেখেন। কোনো সমস্যা নেই।
 
এস আই মকবুল হোসেনসহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের বাড়তি সতর্কতার মূল কারণ হলো-সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া একটি অপ্রীতিকর ঘটনা।
 
শিহাব নামের এক যুবকের ছুরিকাঘাতে এক আনসার সদস্য মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো তিন নিরাপত্তাকর্মী। এর পরই পরই মূলত, বিমান বন্দরের ভেতরে-বাইরে ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
 
এদিকে সাধারণ মানুষ ও বিমান বন্দরে আসা দেশি-বিদেশি নাগরিকদের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীর হতাহতের ঘটনায় হতবাক হয়ে গেছেন নিরাপত্তাকর্মী, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সংশ্লিষ্টরা।
 
তারা বলছেন, নিকট অতীতে দেশে নানা রকম অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সময় নজিরবিহীন সহিংসতার মধ্যে কোনো বিমান বন্দরে কোনো অঘটন ঘটেনি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনা থাকছে সব সময় নিরাপদ।
 
কিন্ত রোববার সন্ধ্যার ঘটনা সব দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ঘটনার পরে সাধারণ যাত্রী, দর্শনার্থী, যাত্রীর আত্মীয় স্বজন, বিমান বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশি-বিদেশি নাগরিক-কাউকেই সহজে ছাড়া হচ্ছে না। সিএনজি, পাজেরো, প্রাইভেটকার, মাইক্রো, জিপ- বাহন যাই হোক না কেন উল্টে-পাল্টে তল্লাশির পর সন্তোষজনক অবস্থানে পৌঁছে তবেই ছাড়া হচ্ছে।
 
এস আই মকবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ধরনের ঘটনা কোনো দিন ঘটেনি। আমরা বিশ্বাস-ই করতে পারছি না এমন একটা ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ঘটনার পর নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে।
 
পুলিশের সদস্য ইমরান হোসেন বলেন, বিমান বন্দরে এমনিতেই কড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। রোববার সন্ধ্যার ঘটনায় সেটি আরো বাড়ানো হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৬
এজেড/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।