ঢাকা, সোমবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যানজটের মহাচক্রে বাড্ডা-লিঙ্ক রোড

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৬
যানজটের মহাচক্রে বাড্ডা-লিঙ্ক রোড ছবি- রানা

ঢাকা: সড়কজুড়ে চলন্ত গাড়িকে ইশারা দিয়েই রাস্তায় নেমে পড়লেন একদল পথচারী। খানিকটা বাধ্য হয়েই গাড়ি থামালেন বিরক্ত গাড়িচালক।

ট্রাফিক পুলিশ তবুও গাড়ি এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে হাত নেড়েই যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে গাড়ির পেছনে গাড়ি থেমে যানজট লেগে গেছে।

সোমবার (০৭ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৭টার দিকে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার লিঙ্ক রোডে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। তবে ত্রিমুখী এই সড়কে এটাই যানজট সৃষ্টির একমাত্র কারণ নয়।

এ মোড় থেকে বিভিন্ন সড়কে ছাড়া, গাড়িগুলোর ইউটার্ন নেওয়া, রিকশার আধিক্য, যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা, গাড়ি পার্কিং, ট্রাফিক সিগন্যালে অবহেলা এবং পুলিশের খামখেয়ালিপনায় বাড্ডা-লিঙ্ক রোডে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে। আর সেই যনজটের প্রভব পড়ে গোটা প্রগতি সরণি ও রামপুরা-মালিবাগ সড়ক জুড়ে।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক সকাল ৭টার আগে মোটামুটি যানজটমুক্ত থাকলেও লিঙ্ক রোড়ের পরিস্থিতি ভিন্ন। গুলশান থেকে আাসা, রামপুরার দিক থেকে আসা এবং নর্দ্দা এলাকা থেকে আসা বিভিন্ন পরিবহনে কারণে ত্রিমুখী এক যানজট তৈরি করে। এ সময় দফায়-দফায় ইউটার্নের সিগন্যাল দিতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে। এরমধ্যে সিগন্যাল না মেনে কেউ উল্টো পথে যাচ্ছেন, কেউ আবার নিজের ইচ্ছায় গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তুলছেন।

লিঙ্ক রোড মোড়েই পাশেই রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্ট। সেখানে চালক বা গাড়ির কাগজপত্র চেকের নামে গাড়ি দাঁড় করালেই পেছনে লম্বা যানজট তৈরি হয়।

স্থানীয় দোকানদার শামসুল হক বলেন, জ্যাম কমানো জন্য রাজধানীর বিভিন্ন ভিআইপি সড়কে কত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অথচ প্রগতি সরণিতে কোনো ব্যবস্থা নেই। পুলিশ থাকলেও তাদের সামনেই অনিয়ম চলতে থাকে। যেন দেখার কেউ নেই।

তবে পুলিশ বলছে, জনগণের অসচেতনা আর নিয়ম না মানার প্রবণতাই মূলত রাস্তাটির জ্যামের কারণ বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে বাড্ডা লিঙ্ক রোড এলাকার ট্রাফিক পরিদর্শক মো. সাজ্জাদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বাড্ডা এলাকায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির বসবাস বেশি। এজন্য এ এলাকার অন্যতম বাহন রিকশা। রিকশার কারণেই এ সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এছাড়া সকাল হলেই এ এলাকার গার্মেন্টস শ্রমকিরা কাজে বের হন। তারা যখন দল বেঁধে চলার সময় রাস্তাটিকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে। সিগন্যাল না থাকলেও নিজেরাই গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে।

‘তবে শুধু গার্মেন্টস কর্মী নয়, অফিসগামী, শিক্ষার্থী, এমনকি সাইকেল, ভ্যান চালকরাও ইচ্ছে মতো রাস্তা পার হয়ে যাচ্ছেন। রাস্তার মাঝে উঁচু বেড়া না থাকায় সাইকেল বা ভ্যানচালকরা সামান্য উঁচু রোড ডিভাইডার পার হয়ে যাচ্ছেন অনায়সে’ বললেন তিনি।

এছাড়া উত্তর বাড্ডা থেকে রামপুরা যাওয়ার পথে ভাঙাচুড়া রাস্তার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে বাসচালক সালাহউদ্দিন।
 
একাধিক চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লিঙ্ক রোডের অদূরের নির্মাণাধীন ইউলুপের কাজ শেষ হলেই এই এলাকার জ্যাম অনেকটাই কমে যাবে। তবে সবচেয়ে জরুরি এখানকার রাস্তাঘাট সংস্কার করা।

বাসচালক সালাহউদ্দিন বলেন, ইউলুপ নির্মাণের কারণে মধ্যবাড্ডায় দীর্ঘক্ষণ জ্যামে থাকতে হচ্ছে। তার ওপর মাঝে-মাঝে সেখানে কোনো ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় চালকদের স্বেচ্ছাচারিতায় যানজট প্রকট আকার ধারণ করছে।

মধ্যবাড্ডার দিকে এগুতেই সে প্রমাণ মেলে। ভাঙা রাস্তা, আর চালকদের অনিয়মে রামপুরা ব্রিজের আগে সৃষ্ট যানজট পেরুতেই লেগে যায় ১৫-২০ মিনিট। সেখানে কোনো ট্রাফিক পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৬
জেপি/টিআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।