ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আরও বাসের দাবি নারীদের, বিআরটিসি বলছে যাত্রী সংকট

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৬
আরও বাসের দাবি নারীদের, বিআরটিসি বলছে যাত্রী সংকট

ঢাকা: কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীসহ নগরবাসী নারীদের যাতায়াত সুবিধায় রাজধানীর ১৫ রুটে বিআরটিসির ১৫টি মহিলা বাস চালু রয়েছে। রাজধানীতে মাত্র ১৫টি বাস পর্যাপ্ত নয় জানিয়ে নারীদের জন্য আরও বাস সার্ভিস চালুর দাবি করছেন রাজধানীর কর্মজীবী নারীরা।

অন্যদিকে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ বলছে যে বাসগুলো চালু আছে তাতেই যাত্রী সংকট রয়েছে। ফলে বিআরটিসির মহিলা বাসে লোকসান গুণতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, মহিলা বাসে লোকসান কমছে না। যদি নারী যাত্রী বাড়ে তবেই আরও বাস দেওয়া হবে নগরীতে।

বর্তমানে এই সার্ভিস চালু রয়েছে ঢাকা ও চট্রগ্রামে। ঢাকায় ১৫টি রুটে ১৫টি এবং চট্রগ্রামে ২টি মহিলা বাস সার্ভিস চালু রয়েছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে চালু থাকা বাসগুলোর খুবই কম রুটেই পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়া যায়। বেশিরভাগ রুটেই যাত্রী কম। কোনো কোনো রুটের বাস মাত্র ৭ থেকে ১০ জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে।

তিনি আরও জানান, একটি বাস রাস্তায় চালানোর পর অনন্ত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ লাভ থাকতে হবে। কিন্তু লাভ তো দূরের কথা শুধু চালানই উঠছে কিছু কিছু রুটে।

বিআরটিসি অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সাল থেকে একটি দোতলা বাস দিয়ে মহিলা বাস সার্ভিস চালু করা হয়। পরবর্তীতে চাহিদা বাড়ায় ২০০৯ সালে ২টি এবং ২০১১ সালে তা বাড়িয়ে ১৭টি করা হয়। বর্তমানে  দোতলা বাস আছে ৯টি, একতলা ৮টিসহ ঢাকা ও চট্টগ্রামে মোট ১৭টি বাস চলছে। বর্তমানে রাজধানীতে ডিপোর সংখ্যা ৯টি, সিট ক্যাপাসিটি দোতলা বাসে ৭৫ এবং একতলা বাসে ৫২টি আসন।

বিআরটিসির চেয়ারম্যান  মো. মিজান‍ুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিমাসে আমাদের বিআরটিসির কর্মকর্তাদের সাড়ে ৭ কোটি টাকা বেতন দিতে হয়। আমার বেতন থেকে শুরু করে এই বেতন সবার বেতন নিতে হয় বাস ভাড়া দিয়েই। মহিলা বাস চালিয়ে কোনো লাভ হয় না।

সব সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানোর পর থেকে আমরা বেশি সংকটে রয়েছি। নতুন স্কেলে বেতন দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।

অথচ নারী যাত্রীরা বলছেন বাস সংকট, বাস আরও বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চেয়ারম্যান বলেন, আমরা নারী বিদ্বেষী নই। কিন্তু যাত্রী সংকট নিয়ে এই মূহূর্তে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ বিআরটিসি নিতে পারবে না।

বিআরটিসির বাস সংকটের কথা উল্লেখ করে উত্তরার বাসিন্দা ইডেন কলেজের ছাত্রী শারমিন আকতার বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের যথেষ্ট বাস আছে। রাস্তায় আমরা বের হলে বাস দেখতে পাই না। বাস যদি পর্যাপ্ত থাকে তবে আমরা বাসের দেখা পাই না কেন?

একই অভিযোগ মতিঝিলে গ্রামীণ কাস্টমার কেয়ারের চাকরীজীবী নাদিয়া আফরিনের। তার বাসা নতুন বাজার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাসা থেকে মতিঝিলে সরাসরি কোনো বাস নেই। আমাকে দুই বার বাস পরিবর্তন করতে হয়। রাস্তায় বের হওয়ার পর মহিলা বাসের দেখা মেলে না।

এক নজরে মহিলা বাসের রুট সমূহ:
মিরপুর-১২ থেকে মতিঝিল, আব্দুল্লাহপুরে থেকে মতিঝিল, শেওড়া বাজার থেকে এমইএইচ, খিলগাঁও তালতলা থেকে গুলিস্তান, নতুন বাজার, মধ্যবাড্ডা থেকে মতিঝিল, নতুন বাজার, গুলশান-২ থেকে মতিঝিল, বনশ্রী থেকে মতিঝিল, নারায়ণঞ্জ থেকে মতিঝিল, মিরপুর ১০ থেকে মতিঝিল, মিরপুর ১৪ থেকে মতিঝিল, সাভার থেকে মতিঝিল, শিববাড়ী থেকে মতিঝিল, মোহাম্মদপুর থেকে কুড়িল।  

এছাড়াও নারায়ণঞ্জ থেকে মতিঝিল ২টি এবং খিলগাঁও-তালতলা থেকে গুলিস্তান ২টি বাস চলাচল করে। অন্য রুট সমূহের জন্য রয়েছে ১টি করে বাস।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
আরএটি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।