ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আরও অত্যাধুনিক হচ্ছে এনবিআর ভবন, বাড়ছে ব্যয়-মেয়াদ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৬
আরও অত্যাধুনিক হচ্ছে এনবিআর ভবন, বাড়ছে ব্যয়-মেয়াদ

ঢাকা: নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না রাজস্ব ভবনের নির্মাণ কাজ। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ৩০তলা ভবনটি নির্মাণে সময় ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

 

২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এনবিআর ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের কথা ছিল। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৪১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। পরে ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রথম দফায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বর ও দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করে পরিকল্পনা কমিশন।

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক বিভাগে আরও দুই বছর সময় ও ৩৮৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা বা ২৭৪ শতাংশ ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে এনবিআর। ফলে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৫২৮ কোটি ৬৮ লাখে টাকা ও মেয়াদ বেড়ে হচ্ছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
 
 
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রউফ বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংশোধন করা হচ্ছে। যে কারণে ২০১৮ সালের সময় ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হচ্ছে। একইভাবে নতুন ডিপিপি’র আওতায় প্রকল্পের কাজের পরিধিও বাড়ছে।
 
তিনি বলেন, প্রথমে ২০তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত থাকলেও এখন ৩০তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়ায় ব্যয়ও বাড়ছে। ভবনের নানা অঙ্গের কাজেরও পরিবর্তন আসছে। প্রাথমিকভাবে ভবনটি ১২তলা পর্যন্ত করা হবে। পরে বাকি অংশ নির্মাণ করা হবে।
 
তিনি জানান, ২০তলা ভিত্তির পরিবর্তে ৩০ তলার ভিত্তি, ভবনের মোট আয়তন ৪ লাখ ২৭ হাজার ৪৯০ বর্গফুটের পরিবর্তে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ বর্গফুটে উন্নীত করাসহ নানা কারণে বাড়ছে প্রকল্প ব্যয়। এছাড়া দু’টি বেইজমেন্টের প্রতিটির আয়তন ৪০ হাজার বর্গফুটের পরিবর্তে ৬৬ হাজার বর্গফুট, টিপিক্যাল ফ্লোর এরিয়া ৩২ হাজার বর্গফুটের পরিবর্তে ৪৬ হাজার বর্গফুট, প্রতি ফ্লোরের উচ্চতা ১০ ফুটের পরিবর্তে ১৩ ফুট এবং ১২তলা ভবনের মোট উচ্চতা ১২০ ফুটের পরিবর্তে ১৫৬ ফুটে উন্নীত করা হবে।
 
এনবিআর সূত্র জানায়, আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ভবনটিতে কনভেনশন সেন্টার, ব্যাংক, করদাতা তথ্যকেন্দ্র, অডিটরিয়াম, কর্মকর্তাদের জন্য জিম, সুইমিং পুল ও হেলিপ্যাড থাকবে।  প্রথমে এনবিআর সংশ্লিষ্ট অধিদফতর ও পরিদফতরগুলোকে ১২তলার মধ্যেই স্থান দেওয়া হবে। পুরো ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঢাকার কর অঞ্চল ও ভ্যাট কমিশনারেটগুলোকে স্থানান্তর করা হবে।
 
সূত্র জানায়, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থাসহ একটি টাওয়ার বিশিষ্ট সুউচ্চ ভবন হবে। সেখানে সৌর বিদ্যুৎ, সেন্ট্রাল এসিসহ সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নানা ধরনের কারুকার্য থাকবে। সৌন্দর্য বর্ধনে ভবনের সামনে স্থাপিত হবে পানির ফোয়ারা, ভাস্কর্য এবং সুদৃশ্য বাগান।
 
পার্কিংয়ের জায়গায় ২৮০টি প্রাইভেটকার, দেড় শতাধিক মোটরসাইকেল, ৩ শতাধিক সাইকেল এবং ২০-২৫টি বাস রাখার সুবিধা থাকবে। অত্যাধুনিক লিফট, স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর, ইলেকট্রিক সাব-স্টেশন, সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম, ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেমও থাকবে ভবনটিতে।
 
নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক দুই বা ততোধিক মেটাল ডিটেক্টর সিস্টেম, অত্যাধুনিক মিলনায়তন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য পৃথক ট্রেনিংরুম, রেস্ট হাউস ও ডরমেটরির ব্যবস্থাও থাকবে।
 
প্রস্তাবিত সংশোধিত প্রকল্পে ভবনের প্রকৃতি, ভিত্তি, বেইসমেন্ট আয়তন, টিপিক্যাল ফ্লোর,এরিয়া, প্রতি ফ্লোরের উচ্চতা, ভবনের মোট উচ্চতা ব্যাপক পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গণপূর্ত অধিদফতর।  
 
অধিদফরের নির্বাহী প্রকৌশলী (নগর গণপূর্ত বিভাগ) শাহীন মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে রাজস্ব ভবন নির্মাণের যে নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে, বর্তমানে তার পুরোপুরি পরিবর্তন করা হচ্ছে। কাজের নানা পরিধিও বাড়ছে। উন্নতমানের সুউচ্চ গ্রিন বিল্ডিং করতে নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ফলে ব্যয় ও সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।