ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অভ্যাস খারাপ, তাই...

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৬
অভ্যাস খারাপ, তাই... ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মঙ্গলবার (০৮ নভেম্বর) সকাল পৌনে ৮টা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক ঘেঁষা ভবনের কোণ থেকে একটি নবজাতক শিশুকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন লায়লা বেগম।
 

ঢাকা: মঙ্গলবার (০৮ নভেম্বর) সকাল পৌনে ৮টা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক ঘেঁষা ভবনের কোণ থেকে একটি নবজাতক শিশুকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন লায়লা বেগম।


 
সঙ্গে থাকা বৃদ্ধা মাকে এক হাতে ধরে অন্য হাতে কোলের বাচ্চা সামলিয়ে ব্যস্ত সড়ক পার হচ্ছেন তিনি। লায়লা বেগমের চলার পথ নির্বিগ্ন করতে হঠাৎ থমকে দাঁড়াচ্ছে ছুটে চলা গাড়ি।

মো. মনির হোসেন। এক হাতে প্রেসক্রিপশন ফাইল ও ওষুধের ব্যাগ। অন্য হাতে বৃদ্ধ বাবার একটি হাত শক্ত করে ধরা। তিনিও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পাশ থেকে বারডেম হাসপাতালে যাচ্ছেন।
 
বয়স্ক মা-বাবা ও নবজাতক নিয়ে লালয়ালা বেগম ও মনির হোসেনের ঝুঁকিপূর্ণ এই রাস্তা পারাপার কেবলমাত্র নিজেদের জন্য দুর্ভোগ ডেকে আনবে- তা নয়! বরং শাহবাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে শত শত মানুষের দুর্ভোগের কারণ হতে পারে তাদের এই ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার।  

অথচ শাহবাগ মোড়ের ৩শ’ গজের মধ্যে তিনটি ফুট ওভার ব্রিজ। পিজি থেকে বারডেমে, বারডেম থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও জাতীয় জাদুঘর থেকে শাহবাগ বিপণি বিতানকে যুক্ত করা এ তিনটি ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করলে সব ধরনের ঝুঁকি এড়িয়ে অনায়াসে রাস্তা পার হওয়া সম্ভব।

কিন্তু নিয়ম না মানার খারাপ অভ্যাসের কারণে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই শাহবাগ মোড়ের চতুরমুখী রাস্তা পার হন বেশিরভাগ লোক। বারডেমের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে যুক্ত করা ফুটওভার ব্রিজটি ব্যবহার করলেও বারডেম থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও জাতীয় জাদুঘর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে যুক্ত করা ফুটওভার ব্রিজ দু’টি ব্যবহার হচ্ছে না বললেই চলে। বেশিরভাগ লোকই ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন। শাহবাগ মোড়ে জনদুর্ভোগের অনেকগুলো কারণের মধ্যে এটি অন্যতম বলে মনে করেন সাধারণ যাত্রীরাও।

দেশের প্রধান দু’টি হাসপাতাল পিজি-বারডেমের পাশাপাশি অবস্থানের কারণে শাহবাগে সব সময় থাকে লোকজনের ভিড়। শহরে কেন্দ্রে অবস্থতি শাহবাগ মোড় দিয়ে সারা দিন হাজার হাজার গাড়ি আসা যাওয়া করলেও এখানক থেকে গাড়িতে ওঠা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

কারণ, গাড়ির সবগুলো সিট শাহবাগ মোড়ে পৌঁছানোর আগেই বুকিং হয়ে যায়। দাঁড়ানোরও জায়গাও মেলে না। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে ওঠার সুযোগ মেলে না।

সাধারণ যাত্রীদের পরামর্শ হলো- দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রধান দু’টি হাসপাতাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বারডেম হাসপাতালের কথা মাথায় রেখে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত স্পেশাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

অর্থাৎ শাহবাগ মোড় থেকেই স্পেশাল ওই বাসগুলো ঢাকার বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। মানুষ শাহবাগ থেকে বাসে উঠে বসার জায়গা পাবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।
 
বাসের জন্য আধা ঘণ্টা ধরে শাহবাগ মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখানকার প্রধান সমস্যা দূর থেকে ছেড়ে আসা বাসের যাত্রী হতে হয়। কোনো সিট পাওয়া যায় না। দাঁড়িয়ে যাওয়ার জায়গাও থাকে না। অনেক সময় এখান থেকে কাউকে বাসে তুলতে চায় না পরিবহন কর্মীরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
এজেড/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।