ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফিটনেসবিহীন লেগুনার মালিক পুলিশও!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
ফিটনেসবিহীন লেগুনার মালিক পুলিশও! ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

যানজটের নগরী রাজধানী ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হিউম্যান হলারের (লেগুনা) জুড়ি নেই।

ঢাকা: যানজটের নগরী রাজধানী ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হিউম্যান হলারের (লেগুনা) জুড়ি নেই। গণপরিবহন সংকট থাকায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী আইন লঙ্ঘন করে কাটছে যাত্রীদের পকেট।

সঙ্গে রয়েছে নানা ধরনের ভোগান্তি, ঝুঁকি।

সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মাঝে মাঝে নড়েচড়ে বসলেও নগরীর প্রায় সব রুটেই দাপটের সঙ্গে চলছে ফিটনেসবিহীন, গাড়ির লাইসেন্স, রুট পারমিটবিহীন লেগুনা।

আর চরকি ঘুরিয়ে মাখন তুলে নিচ্ছেন ‘বড় ভাই’রা। কেবল তাই নয়, সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা এবং আইনের প্রয়োগ যাদের হাতে- সেই ট্রাফিক পুলিশের কিছু কর্মকর্তাও অবৈধভাবে চলা এসব লেগুনার মালিক।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি লেগুনা চলাচল করে। প্রতিটি লেগুনাতে একবারে ১৪ জন যাত্রী ওঠে- প্রতিজনের ভাড়া ১০ টাকা।

যাত্রীদের ভাষায়, ‘এসব লক্করঝক্কর লেগুনাগুলোর বয়স কত চালকরাও ঠিক জানেন না’।

চালকরা জানান, পুরনো মাইক্রোবাস কেটে অনেক লেগুনা তৈরি করা হয়েছে। সিএনজিচালিত লেগুনাগুলোর গ্যাস-সিলিন্ডার শেষ কবে পরীক্ষা করা হয়েছিলো মনে নেই কারো।

অধিকাংশ গাড়ির লাইসেন্স, ড্রাইভিং লাইসেন্স তো নেই। সহকারী চালক (হেলপার) ভাড়া তোলে দরজার বাইরে ঝুলে ঝুলে। দিন শেষে বেতন কম হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ এই পেশায় সহকারী হিসেবে চালকরা বেছে নেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের। এসব শিশুরাই আবার গাড়ি চালানো শিখে এক সময় চালক বনে যান।

ফিটনেস না থাকায় ঝুঁকির পাশাপাশি রয়েছে যাত্রীভোগান্তি। পেছনে ১০টি আসন এবং সামনে চালকের পাশে একটি আসন থাকলেও এতে যাত্রী নেওয়া হয় ১৪ জন। সকাল-সন্ধ্যা অফিস সময়ে হেলপার ছাড়াও বাইরে ঝুলে থাকে আরো তিন-চারজন যাত্রী!

আইন লঙ্ঘন করার প্রসঙ্গে তুললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চালক জানান, মোহাম্মদপুর এবং ফার্টগেট- দুই স্টপেজেই লাইন খরচ (‘জিপি’ নামে প্রচলিত) পরিশোধ করতে হয়। যাদের টাকা দেওয়া হয়, তারাই সব ‘ম্যানেজ’ করেন।

বাংলানিউজের অনুসন্ধানে উঠে আসে,
এই রুটে চলা মোট সাতটি গাড়ির মালিক ট্রাফিক পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। ফলে ফিটনেস না থাকলেও ওই গাড়িগুলোতে কখনো রেকার লাগে না।

এমনই একজন ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আখলাস। তার দু’টি লেগুনা এই রুটে চলাচল করে।

তার সঙ্গে যোগাযোগ কর‍া হলে আখলাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমার দু’টি লেগুনা আছে ওই রুটে। কেনো কোনো সমস্যা?

লাইন খরচ বাবদ প্রতিদিন কত টাকা করে দিতে হয় জনতে চাইলে এক চালক বলেন, ফার্মগেটে ৪৬০ এবং মোহাম্মদপুরে ১১০ টাকা প্রতিদিন দিতে হয়।

কারা এই টাকা নিচ্ছে জানতে চাইলে কোন চালকই সরাসরি কিছু বলতে রাজি হননি। তারা বলেন, বড়ভাই ‘নেতা’। তিনিই এই রাস্তার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন।

তবে ‘বড় ভাই’ খ্যাত ওই ব্যক্তির পরিচয় জানাতে পারেনি কেউ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।