ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এসপি’র সহায়তায় অসহায়ত্ব ঘুচলো সুরমার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৬
এসপি’র সহায়তায় অসহায়ত্ব ঘুচলো সুরমার

সুরমা বেগম, ১১ বছর বয়সে বিয়ে হয় ইসমাইল হোসেন নামে এক মৎস্য শ্রমিকের সঙ্গে। ১৫ বছর হতে না হতেই হয়ে যায় দুই সন্তানের জননী। আর ২০ বছরেই বিধবা।

কাকচিড়ার রূপধন থেকে ফিরে: সুরমা বেগম, ১১ বছর বয়সে বিয়ে হয় ইসমাইল হোসেন নামে এক মৎস্য শ্রমিকের সঙ্গে। ১৫ বছর হতে না হতেই হয়ে যায় দুই সন্তানের জননী।

আর ২০ বছরেই বিধবা।

কিছুদিন আগেও যে সংসারে ছিল হাসি-আনন্দ। হঠাৎই সেই সুখের সংসারে নেমে আসে অন্ধকার।

চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি বঙ্গোপসাগরে মৎস্য শ্রমিক পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের রূপধন গ্রামের আজগর আলীর ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন দস্যুদের গুলিতে নিহত হয়। উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে পড়ে সুরমা।

স্বামীহারা সংসারে দুই মেয়েকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়ে। বড় মেয়ে রাইসার বয়স পাঁচ। ছোট মেয়ে সুমাইয়ার বয়স আট মাস। বাড়িঘর মিলিয়ে মাত্র তিন কাঠা জমি রেখে গেছেন ইসমাইল। শ্বশুর বেঁচে নেই। শাশুড়িও তাদের ফেলে চলে গেছেন অন্যত্র।

সুরমার দিনমজুর বাবা সিদ্দিক মিয়া থাকেন ঢাকায়। গ্রামে তাদের দেখার কেউ নেই। এসময় সুরমাকে নিয়ে পত্র-পত্রিকায় একের পর এক লেখা হয় মানবিক স্টোরি।

গণমাধ্যমে সুরমাকে নিয়ে লেখা মানবিক স্টোরি চোখে পড়ে দেশের ধনাঢ্যসহ আপমর জনসাধারণের। কিন্তু এতো মানুষের চোখে পড়লেও কেউ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেননি।

একপর্যায়ে তার অসহায় অবস্থা চোখে পড়ে বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের। সংবাদকর্মী এবং সমাজসেবকদের সহযোগিতায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তিনি।

পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের নেতৃত্বে অন্যান্যদের সহযোগিতায় সুরমাকে একটি দোকান ঘর তৈরি করে দেওয়া হয় যার নাম স্বাধীন স্টোর।

উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের রূপধন বাজারে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয় একটি ভিটি। বিজয় বসাক এক প্যাকেট বিস্কুট আর চকলেট কিনে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন সুরমার স্বাধীন স্টোরের। হস্তান্তর করা হয় ভিটির দলিলসহ অন্যান্য কাগজপত্র।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন ১০ হাজার, পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন ৫ হাজার ও পাথরঘাটা উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অরুন কর্মকার ৫ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দেন।

বরগুনা পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, আমরা মানুষ। আর সেই মানসিকতা নিয়েই একজন সুরমার পাশে দাঁড়িয়েছি। জানিনা কতটুকু করতে পেরেছি।

তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমরা সুরমাকে একটু সাহায্য করেছি মাত্র, এখন সুরমাকে দেখে রাখার দায়িত্ব আপনাদের।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ইতোপূর্বে সুরমার পুনর্বাসনের জন্য সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকমের তদারকি থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।