ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতি বিন্দু পানি প্রাধান্য দিতে বুদাপেস্ট সামিট

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬
প্রতি বিন্দু পানি প্রাধান্য দিতে বুদাপেস্ট সামিট

দাপেস্টে এবার যে বিশ্ব পানি সম্মেলন হতে যাচ্ছে তার প্রতিপাদ্যঅনেকটা এ রকম- হোক প্রতিটি বিন্দু পানির সুব্যবস্থাপনা। ইউরোপীয় দেশ হাঙ্গেরির এই রাজধানীতে হিমাঙ্কের নিচে থাকা তাপমাত্রার মধ্যে বসে বিশ্বের শীর্ষ নেতারা উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় বসবেন।

ঢাকা: বুদাপেস্টে এবার যে বিশ্ব পানি সম্মেলন হতে যাচ্ছে তার প্রতিপাদ্যঅনেকটা এ রকম- হোক প্রতিটি বিন্দু পানির সুব্যবস্থাপনা। ইউরোপীয় দেশ হাঙ্গেরির এই রাজধানীতে হিমাঙ্কের নিচে থাকা তাপমাত্রার মধ্যে বসে বিশ্বের শীর্ষ নেতারা উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় বসবেন।

তাতেই এ বিষয়ে কথা হবে।

২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর এই বিশ্ব পানি সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন পানি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের বিশ্ব প্যানেলের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেন শেখ হাসিনাকে। ১০ সদস্যের এ প্যানেল গঠিত হয়েছে রাষ্ট্র কিংবা সরকার প্রধানদের নিয়েই। ওয়ার্ল্ড ওয়াটার কাউন্সিলের সদস্যদের নিয়েই তারা বসবেন আলোচনায়।

সবদেশে সবকালের জন্য পানিকেই সহযোগিতা, শান্তি ও উন্নয়নের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করে টানা তিনদিন কথা বলে তারা একটি বুদাপেস্ট ঘোষণায়ও উপনীত হবেন। আর সেই ঘোষণায় অবধারিতভাবে পানি ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) মধ্যে টানা হবে এক সংযোগ রেখা।

বাংলাদেশের সামনে সবচেয়ে বড় যে প্রাকৃতিক ঝুঁকি তা এই পানি ঘিরেই। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমেই বাড়ছে। তাতে লবণাক্ত পানির পরিধি বিস্তৃত হচ্ছে,পাশাপাশি সুপেয় পানির আকাল বাড়ছে। পাতালে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে আর নদীগুলো হারাচ্ছে নাব্যতা। সব মিলিয়ে পানি নিয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব এজেন্ডা রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হিসেবে বাংলাদেশের বড় একটি অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আর সেসবই হবে শেখ হাসিনার এজেন্ডা।

শেখ হাসিনার সঙ্গে ওই প্যানেলে আরও রয়েছে মরিসাসের প্রেসিডেন্ট আমিনা গারিব, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতো, (এরা দুজন প্যানেলেরকো-চেয়ারের দায়িত্বে রয়েছেন) অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম ট্রানবুল, হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট জ্যানোস আদের, জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ এনসুর, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রাট, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সল ও তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালিরাহমোন। দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হ্যান সিউং-সু এবং পেরুর পরিবেশমন্ত্রী ম্যানুয়েল পালগার ভিদাল এই প্যালেলের উপদেষ্টা।

এদের পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ওয়াটার কাউন্সিলের ৩৫০ সদস্য সংস্থার কর্তাব্যক্তিরা থাকবেন এই বিশ্ব পানি সম্মেলনে।

মূলত বিশ্ব ওয়াটার কাউন্সিলের উদ্যোগেই এ শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে যার পৃষ্ঠপোষকতা করছেন হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট হ্যানোস আদের।

তিনদিনের এ কর্মসূচিতে শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি থাকবে অন্তত আরওছয়টি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। ২৯ নভেম্বর থাকবে বিশ্ব পানি সম্মেলন এক্সপোইনোভেশন ডে, তিনদিন ধরেই পাশাপাশি চলতে থাকবে সিভিল ফোরামের কার্যক্রম। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফোরামের কার্যক্রম চলবে ২৮-২৯ এই দু’দিনব্যাপী, এক্সপো এডুকেশন ডে হিসেবে পালিত হবে ৩০ নভেম্বর দিনটি, উইমেন ফোরামের কার্যক্রম ২৮ ও ২৯ নভেম্বর, আর ইয়ুথ ফোরামের আলোচনাচলবে ২৮ থেকে ৩০ তিনদিন ধরেই।

প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই বিশ্ব নেতারা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে পানির সম্পর্ক টানতে প্যানেল আলোচনায় বসবেন। আর পরের দিকে থাকবে সবার জন্য নিরাপদ ও সামর্থ্যের মধ্যে সুপেয় পানির সুব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা। বিশ্ব নেতারা এই প্রশ্নেও তাদের আলোচনা করবেন যে, আমাদের কি পান করার মতো পর্যাপ্ত পানি রয়েছে? তাদের আলোচনায় পয়ঃনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা, উন্নত জনস্বাস্থ্যের জন্য পানির সমাধান স্থান পাবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফোরামে মানবতা ও প্রকৃতির জন্য পানির ভারসাম্য রক্ষা করে এসডিজি অর্জন, আর লবণাক্ত সমুদ্রের স্তর বৃদ্ধি ও নদীর অবক্ষয়- এই দুই প্রতিপাদ্যে চলবে আলোচনা। জলবায়ু পরিবর্তনের সাম্প্রতিক প্রভাবগুলো এতে গুরুত্ব পাবে।

সিভিল ফোরামে পানি ঘিরে পাল্টে যাওয়া বিশ্বের নানা দিক উঠে আসবে। আর ইয়ুথ ফোরামে পানি নিয়ে যুবশ্রেণীর উদ্যোগগুলো তুলে ধরা হবে।

এবারের সম্মেলনে সবার চোখ থাকবে ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় পানি সংক্রান্ত ‍উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনার দিকে। তাতেই অংশ নেবেন প্যানেল নেতারা আর তাদের আলোচনার ঘুরপাক খাবে প্রতিটি বিন্দু পানির সুব্যবস্থাপনা নিয়ে। তারা মানুষ ও পৃথিবী উভয়ের জন্য পানির মান উন্নয়ন নিয়েও কথা বলবেন। ভাবনা প্রকাশ করবেন বিশ্বটাকে আরও সবুজ করে কীভাবে গড়ে তোলা যায় সে নিয়েও।

এই সম্মেলনে পানি সম্পর্কিত সমস্যার সমাধানে নতুন নতুন উদ্ভাবনগুলো তুলে ধরা হবে আর পাশাপাশি পানি সম্পর্কিত শিক্ষা কার্যক্রমগুলো কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাও প্রদর্শিত কিংবা উপস্থাপিত হবে এ আয়োজনে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব আয়োজনের প্রায় সবগুলোতেই তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবেন। পাশাপাশি সফরসঙ্গীরাও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন বিভিন্ন ফোরাম ও কার্যক্রমে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬
এমএমকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ