ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

হাসপাতালের আড়ালে মাদক ব্যবসা!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
হাসপাতালের আড়ালে মাদক ব্যবসা! ছবি: অনিক খান - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া মোড় এলাকায় শাহানা জেনারেল প্রাইভেট হাসপাতাল। এ হাসপাতালের ভেতরেই রয়েছে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া মোড় এলাকায় শাহানা জেনারেল প্রাইভেট হাসপাতাল। এ হাসপাতালের ভেতরেই রয়েছে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

আর এখানেই চলতো মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের আড্ডা। কেউ কেউ এখান থেকে মাদক কিনে কিংবা এখানে বসেই সেবন করতো।

হাসপাতালে ভেতরে প্রবেশ করতেই রক্তমাখা সুই-সিরিঞ্জ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের সদস্যদের চোখে ছানাবড়া। এসময় তার প্যাথেড্রিন ইনজেকশনও উদ্ধার করেন।

মূলত হাসপাতালের আড়ালে এখানে চলতো রমরমা মাদক ব্যবসা। অপচিকিৎসা থেকে মাদক ব্যবসাসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ড সবই চলতো এ হাসপাতালে।

ফলে রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে এ হাসপাতালটিকে সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরশাদ উদ্দিন। পরে তিনি বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ময়মনসিংহ নগরীতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক-প্যাথলজি সেন্টারগুলো মানুষের সঙ্গে প্রতারণার দায়ে স্বাস্থ্যসেবায় সুবিধা করতে না পেরে জড়িয়ে পড়েছে নানা অপকর্মে।

এসব অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িত হাসপাতালের মালিকদের শেল্টার দেয় একশ্রেণির প্রভাবশালী মহল।

সূত্র মতে, নগরীর চরপাড়া এলাকার যেসব ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের আনাগোনা কম সেখানেই চলে এসব অপকর্ম। হাসপাতালের সামনের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের যোগসাজস রয়েছে। এর মধ্যে শাহানা জেনারেল হাসপাতাল অন্যতম।

স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা নামসর্বস্ব এ হাসপাতালেই জমিয়ে তুলেছেন মাদক ব্যবসা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৫শ’ গ্রাম গাঁজা, অসংখ্য প্যাথেড্রিন ইনজেকশন, কনডম ও রক্তমাখা সুই-সিরিঞ্জ উদ্ধার করা হয়।

চিকিৎসা সেবার নাম করে এখানে দেহ ব্যবসার অভিযোগও ছিলো। একশ্রেণির নারীদের নাইট ডিউটির নামে রেখে, তাদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো হতো বলেও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরশাদ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, নাম সর্বস্ব এ হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে মাদক দ্রব্য রাখার অপরাধে হাসপাতালের মালিক মাহাবুব (৪০) ও জাহাঙ্গীর আলমকে (৪০) এক বছর করে কারাদণ্ড অনাদায়ে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অবৈধভাবে হাসপাতাল পরিচালনার দায়ে ভোক্তা অধিকার আইনে দু’লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয় বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরশাদ উদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
এমএএএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।