ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের দড়ি থেরাপি বিজয় সরণিতে!

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের দড়ি থেরাপি বিজয় সরণিতে! ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজধানীতে যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে এই যানজট নিয়ন্ত্রণে বরাবরই ট্রাফিক বিভাগ থেকে নেওয়া হয় বিভিন্ন পদক্ষেপ। সে সব পদক্ষেপের কোনো কোনোটি আবার বেশ অদ্ভুতও বটে!

ঢাকা: রাজধানীতে যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে এই যানজট নিয়ন্ত্রণে বরাবরই ট্রাফিক বিভাগ থেকে নেওয়া হয় বিভিন্ন পদক্ষেপ।

সে সব পদক্ষেপের কোনো কোনোটি আবার বেশ অদ্ভুতও বটে!

সরেজমিনে সোমবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর বিজয় সরণি মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, যানজট নিয়ন্ত্রণে দড়ি ব্যবহার করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।

ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে পড়া এলোমেলো গাড়িগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করাই এর মূল উদ্দেশ্য বলে দাবি করেছেন ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে সকাল ৯টায় দেখা গেল বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পেরিয়ে যানজট ঠেকেছে বিজয় সরণিতে। অন্যদিকে আগারগাঁও রোডেও লেগে আছে তীব্র যানজট। আর সাতরাস্তার দিক থেকে আসা গাড়িগুলোর যানজট গিয়ে ঠেকেছে পুরো রাস্তাজুড়ে। বাকি ফার্মগেট‍গামী রাস্তাটিতে গাড়ি চলছে ধীর গতিতে। কারণ তখনও এ সড়কে ট্রাফিক সিগন্যাল পড়েনি।

বিজয় সরণি মোড়ে যখন যানজটের এই অবস্থা। তখন এলোমেলো চলা মোটরসাইকেলকে রুখতে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে দড়ি থেরাপি।

কেননা একটি সিগন্যাল বন্ধ করে দিলেও মটরসাইকেলের জন্য ট্রাফিক পুলিশদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কখনো কখনো দলবেঁধে সিগন্যাল অমান্য করে চলে যায় মটরসাইকেল আরোহীরা। এজন্য বিজয় সরণি মোড়ে এই দড়ি থেরাপির ব্যবস্থা।

সরেজমিনে বিজয় সরণি মোড়ের যানজটের নেপথ্যে তিন ধরনের সমস্যা পাওয়া গেছে। একটি হলো বিজয় সরণি মোড়ের প্রতিটি সিগন্যাল পৃথক পৃথকভাবে ছাড়তে হয়। অর্থাৎ এই পয়েন্টে পূর্ব-পশ্চিম বা উত্তর-দক্ষিণ অর্থাৎ অন্য পয়েন্টের মতো একযোগে দুটি সিগন্যাল ছাড়ার কোন ব্যবস্থা নেই। অন্য একটি সমস্যা হলো, সিগন্যালের একাংশে দুটি পাম্প ও অপরাংশের সামনে আরেকটি ওভারব্রিজ করা হয়েছে। এতে সড়কের দুই অংশে একলেন করে রাস্তা কমেছে। পাশাপাশি অপ্রশস্ত সড়ক, ভিআইপি ও ভিভিআইপি প্রটোকল, বিজয় সরণি মোড়ে ওভারব্রিজ না থাকায় রাস্তা দিয়ে অবাধে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের কারণেও গাড়ি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ সিগন্যাল থাকলে উল্টো পথে সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের গাড়ি চলাচল করতেও দেখা যায়।
যাত্রীরা বলছেন, সকালে ও সন্ধ্যায় সবচেয়ে বেশি সময় সিগন্যালের অপেক্ষায় থাকতে হয়। এমন হয় দীর্ঘ সিগন্যালের কারণে সময়মতো অফিসে ও বাসায় পৌঁছানো সম্ভব হয় না। আর এখানকার সিগন্যাল মানেই নিশ্চিত আধা ঘণ্টা বসে থাকা। কেননা চারটি সিগন্যাল পরপর ছাড়া হচ্ছে। এর মধ্যে ভিআইপি ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য কখনও বা আবার একটি সিগন্যাল ছেড়ে রাখা হয় দীর্ঘসময়। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।

ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজয় সরণি মোড়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) সাজ্জাদ বাংলানিউজকে বলেন, এখানে মোট চারটি সিগন্যাল। যার প্রতিটি সিগন্যাল স্বতন্ত্র। একটি সিগন্যাল পড়লে মটরবাইকের অত্যাচার বেড়ে যায়। এজন্য ট্রাফিক বিভাগ থেকে মটর সাইকেল রুখতে এই দড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই সিগন্যাল সাথে সাথে দড়ি দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়।

তিনি আরো বলেন, এই বিজয় সরণি মোড়ের আশেপাশে রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এর একপাশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এছাড়া সংসদ ভবন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, সংসদ সদস্যদের বাসভবন, নভোথিয়েটার, খামারবাড়ি, সামরিক জাদুঘরসহ বেশ কিছু স্থাপনা এই সিগন্যালের আওতাভুক্ত। ফলে প্রায় সময় এই রাস্তায় ভিআইপিদের আনাগোনা। এজন্য ভিআইপিদের সুবিধা দিতে গিয়ে অন্য সিগন্যালগুলোতে গাড়ির জটলা বাড়তে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
এসজে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।