ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আরও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হাতে নিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৬
আরও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হাতে নিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দু’টি প্ল্যান্টসহ মূল কাজের মোট ব্যয় ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকার পুরোটাই প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ঋণ দেবে রাশিয়া।

ঢাকা: ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দু’টি প্ল্যান্টসহ মূল কাজের মোট ব্যয় ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকার পুরোটাই প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ঋণ দেবে রাশিয়া।


 
মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
 
ঐতিহাসিক এ প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেও। অনুমোদনের পরে তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের স্বপ্ন। দেশকে উচ্চ পর্যায়ে নিতে হলে আমাদের আরও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হাতে নিতে হবে’।

‘আমরা সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে পারি। তবে জমির পরিমাণ অনেক বেশি লাগে। কয়লা-গ্যাসের তুলনায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ অনেক সাশ্রয়ী। সেজন্য আমাদের আরও পারমাণবিক বিদ্যু‍ৎকেন্দ্র হাতে নিতে হবে। এটি (রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ) এগিয়ে নিয়ে আমাদের নতুন আরও একটি প্রকল্প নিতে হবে’।
 
 
পাবনা জেলার রূপপুরের পদ্মাপাড়ে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। রাশান ফেডারেশনের সহায়তায় ১ হাজার ৬২ একর জমিতে নির্মিত হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
 
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এটি অনেক দিনের স্বপ্ন। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ আরও আগে হওয়ার কথা ছিল। বঙ্গবন্ধুরও স্বপ্ন ছিলো, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের। কিন্তু ঘাতকেরা সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি’।
তিনি আরও বলেন, ‘রূপপুরের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এগিয়ে নেওয়ার পরে আরও একটি এমন প্রকল্প হাতে নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী’।
 
মন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া বর্জ্য নিয়ে যাবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমাদের কোনো দায়িত্ব নেই। এর সব দায়িত্ব নেবে রাশিয়া’।
 
প্রকল্পটির গুরুত্বারোপ করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এক সময় গ্যাস ও কয়লা পাবো না। আমাদের বিদ্যুৎ পেতেই হবে।   কয়লা-গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় যেখানে ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা লাগবে, সেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে লাগবে মাত্র এক হাজার কোটি টাকা’।
 
প্রকল্পটির ভূমি অধিগ্রহণ পর্ব সম্পূর্ণ হয়ে এখন চলছে দেয়াল নির্মাণসহ নানা অবকাঠামোগত কাজ। মাটি ভরাটের কাজও শেষ পর্যায়ে, প্রায় ৯০ শতাংশ।
 
৫০ বছরের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল বিবেচনায়  ১ হাজার ২শ' মেগাওয়াট করে দু’টি  ইউনিটে ২ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। খরচ পড়বে মেগাওয়াট প্রতি মাত্র ৩ টাকা। ২০১৭ সালেই প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ২০২২ সালে প্রথম ইউনিট ও ২০২৩ সালে উৎপাদনে যাবে দ্বিতীয়টি।
 
মূল ইউনিট নির্মাণের পাশাপাশি দৈনিক ১ হাজার ৭শ’ ৫০ কিউবেক মিটার পানি এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ৮১ মিলিয়ন কিউবেক মিটার পানির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও এ প্রকল্পের আওতায় করা হবে। ৫০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ফুয়েল ও ম্যানেজমেন্টও এর আওতাভূক্ত।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৬
এমআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।