ঢাকা: কক্সবাজারের স্মার্ট যুবক সারোয়ার কামাল (৩০)। চট্টগ্রাম থেকে আকাশপথে ঢাকায় এসেছেন, ডমেস্টিক প্যাসেঞ্জার।
কৌশল হিসেবে সঙ্গে নেই পাসপোর্ট, নেই ব্যাগেজ। বিমানবন্দরে নেমে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিতে মিশে গেলেন ইন্টারন্যাশনাল প্যাসেঞ্জারদের সঙ্গে।
নিশ্চিত তথ্য থাকায় কাস্টমস কর্মকর্তা তার সারা শরীরে তল্লাশি করলেন। শীতের দিনেও ঘামছেন কামাল। তথ্য মিলেই গেল, নিশ্চিত স্বর্ণ আছে!
শরীরের কোথাও তো স্বর্ণ নেই। সবশেষে স্যান্ডেলে তল্লাশি। এতো কম দামি স্যান্ডেলে কিভাবে স্বর্ণ থাকবে, দ্বিধা-দ্বন্দ্বে কর্মকর্তা। কিন্তু পা থেকে স্যান্ডেল খুলেই হতবাক!
কম দামি স্যান্ডেলের মধ্যেই যেন স্বর্ণের খনি! একটি দু’টি নয়, ২৪টি স্বর্ণবার! যার ওজন ২.৭৮ কেজি। মূল্য প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যাত্রী কামালের এবার টালবাহানা।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সারোয়ার কামাল নামে ওই যাত্রীর স্যান্ডেল থেকে এভাবে স্বর্ণ জব্দ করে ঢাকা কাস্টমস হাউজ।
ঢাকা কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার (এসি) এএইচএম আহসানুল কবীর এভাবে স্বর্ণ জব্দের বিষয়টি বাংলানিউজের কাছে তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে কিছু ফ্লাইট চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকা আসে। চট্টগ্রাম থেকে কিছু ডমেস্টিক যাত্রী নেয়। অবতরণের পর ইন্টারন্যাশনাল ও ডমেস্টিক যাত্রীরা মিশে যান।
এ সুযোগে বিদেশ থেকে আসা চোরাচালানের পণ্য হাতবদল হয়ে ডমেস্টিক যাত্রীর কাছে চলে যায়। তখন ইন্টারন্যাশনাল যাত্রীকে তল্লাশি করেও কিছু পাওয়া যায় না।
তিনি জানান, নিশ্চিত তথ্য ছিল, সকাল সোয়া ৯টায় রিজেন্ট এয়ারের আরএক্স-০৭২৪ মাসকাট-চট্টগ্রাম-ঢাকা ফ্লাইটে স্বর্ণ আসছে। সকালে ডমেস্টিক গেটে তল্লাশি করা হয়।
সারোয়ার কামাল নামে চট্টগ্রাম থেকে আসা ডমেস্টিক যাত্রীর স্যান্ডেলের ভেতর স্কচটেপ দিয়ে বিশেষ কায়দায় পেছানো ২৪টি স্বর্ণবার জব্দ করা হয়।
অত্যন্ত চতুর কামালের কাছ থেকে স্বর্ণ জব্দের পর তিনি বলতে থাকেন, ‘বাড়ি থেকে এনেছি ব্যবসার কাজে। বিমানবন্দরের বাইরে একজনকে দিতে হবে’।
ব্যবসার কাজে হলে স্যান্ডেলের ভেতর লুকিয়ে কেন? পাসপোর্ট কোথায়? কি ব্যবসা করেন? কাকে দেবেন?-এমন কোনো প্রশ্নেরই জবাব দিতে পারেননি তিনি।
স্যান্ডেল দেখলে কোনোভাবেই বোঝা যাবে না যে, ভেতরে এতোগুলো স্বর্ণবার রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৬
আরইউ/এএসআর