ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্কুলের নতুন পোশাক বানাতে ব্যস্ত দর্জিপাড়া

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৭
স্কুলের নতুন পোশাক বানাতে ব্যস্ত দর্জিপাড়া স্কুলের নতুন পোশাক বানাতে ব্যস্ত দর্জিপাড়া। ছবি: বাংলানিউজ

ময়মনসিংহ: সাদা শার্ট আর নেভি ব্লু প্যান্ট বানাতে বাবার সঙ্গে স্থানীয় এশিয়া টেইলার্সে এসেছে নগরীর সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান আমিন। সাড়ে ৪০০ টাকা মজুরিতে স্কুলের নতুন পোশাকের অর্ডার দিয়ে আনন্দে আত্মহারা কোমলমতি এ শিক্ষার্থী। 

বছরের প্রথম দিনে ঝকঝকে-তকতকে নতুন বই পেয়েছে সে। নানা রঙের বর্ণিল পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে নতুন স্কুল ড্রেস পড়ে সে ছুটবে স্কুলে।

 

বাংলানিউজকে মেহেদী জানায়, স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী নতুন পোশাক বানানোর অর্ডার দেওয়া হয়েছে। নতুন বইয়ের সঙ্গে নতুন পোশাকের আনন্দই আলাদা।  

শুধু মেহেদীই নয়, নগরীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুলের সোনামণিদের মধ্যে এখন শুরু হয়েছে স্কুলের নতুন পোশাক বানানোর ধুম। এতে সব জায়গার মতো ব্যস্ততা বেড়ে গেছে ময়মনসিংহের দর্জিপাড়ায়। স্কুলগুলোতে পোশাক বাধ্যতামূলক হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে অভিভাবকরা ছুটছেন দর্জিপাড়ায়।  

ফলে মূল দোকান থেকে শুরু করে তাদের কারখানায় বেড়েছে কাজের চাপ। সবার আগে দ্রুত সময়ের মধ্যে বানাতে হবে স্কুলের পোশাক। দর্জির দোকানে সেলাই মেশিনের শব্দই বলছে তাদের মহাব্যস্ততার কথা। প্রয়োজনীয় মাপ নিয়ে কারিগররা দিনরাত বিরতিহীন কাজ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ডেলিভারি দিচ্ছেন।  

ময়মনসিংহ নগরীর গাঙ্গিনারপাড়, শিববাড়ি, সানকিপাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে দর্জির দোকান ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্র।  

অভিভাবকরা জানান, কোমলমতি শিশুদের জন্য আরামদায়ক কাপড়ই কেনা হচ্ছে। বাজারে শার্টের জন্য সুতি বা টেট্রন কাপড় বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। আর প্যান্টের সুতি কাপড়ের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এর সঙ্গে রয়েছে দর্জিদের মজুরি।
 ব্যস্ততা বেড়ে গেছে ময়মনসিংহের দর্জিপাড়ায়
নগরীর শিববাড়ি এলাকার আরাফাত টেইলার্সের দর্জি আজিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বছরের প্রথম দিন থেকেই স্কুল ড্রেস বানানোর চাহিদা বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। আর ক’দিন বাদে দম ফেলারও সময় পাওয়া যাবে না।  

স্কুল ড্রেস বানানোর অর্ডারের শীর্ষে রয়েছে নগরীর হকার্স মার্কেটের যমুনা টেইলার্স। গভীর রাত পর্যন্তও অর্ডার নিতে হচ্ছে টেইলার্সগুলোতে।

যমুনা টেইলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী তপন জানান, ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, নগরীর মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, প্রি-ক্যাডেট স্কুলসহ পাঁচ থেকে সাতটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা ড্রেস বানাতে প্রতিদিনই এখানে আসছে। এ সময়টাতে ব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুগুণে। ছয়জন কারিগর কাজ করছেন। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে অন্তত দু’শতাধিক শিক্ষার্থীর ড্রেস বানানো হয়। আর একেকটি ড্রেস বানাতে খরচ পড়ছে ৫৯০ টাকা।

স্থানীয় টরি টেইলার্সের এক কারিগর বলেন, সবাই চাচ্ছেন আগেভাগে এসে নিজের সন্তানের স্কুল ড্রেস বানিয়ে নিতে। ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যেই অর্ডার বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ সময়টাতে কারিগরদের হাতে প্রচুর কাজ থাকে।  

স্কুল ড্রেসের পাশাপাশি নতুন ব্যাগ ও জুতাও চাই শিশুদের। বইসহ প্রয়োজনীয় সব উপকরণ বহনের জন্য নগরীর ব্যাগের দোকানগুলোতেও ভিড় করছেন অভিভাবকরা।
 ব্যস্ততা বেড়ে গেছে ময়মনসিংহের দর্জিপাড়ায়
আব্দুস সালাম নামের এক অভিভাবক জানান, শিশুদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কার্টুন ব্যাগ। প্রতিটি ব্যাগের দাম ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা।  

রাহিম নামের এক শিক্ষার্থী বলে, স্কুলের ম্যাডামরা সাদা কেডস কিনতে বলেছেন। স্কুল থেকেই এটি নির্ধারণ করে দিয়েছে। জুতা পড়ে সব বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলে যাবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৭ 
এমএএএম/আরআর/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।