ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দেশে ফিরলেন হাওরের বাঁধ দুর্নীতি মামলার আসামি হান্নান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
দেশে ফিরলেন হাওরের বাঁধ দুর্নীতি মামলার আসামি হান্নান আব্দুল হান্নান

সিলেট: দেশে ফিরলেন হাওরের বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির মামলার আসামি ঠিকাদার আব্দুল হান্নান।

সুনামগঞ্জের হাওরের বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার ২১ নম্বর আসামি হলেন আব্দুল হান্নান। হান্নানের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে (বিজি-২০২)অবতরণ করেন আব্দুল হান্নান। এরপর বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের জেরার মুখে পড়েন তিনি। এ সময় উচ্চ আদালতের মামলার স্থিতাবস্থার কাগজপত্র দেখানোর পর ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে ছেড়ে দেন।

ওসমানী বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) বশির আহমদ বাংলানিউজকে জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় যুক্তরাজ্য থেকে আসা বিমানের ফ্লাইটে দেশে আসেন হান্নান। দুদকের করা সব মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালত থেকে স্থগিত রাখা হয়েছে-এমন কাগজপত্র দেখান তিনি। এছাড়া এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও দুদক থেকে তাদের হাতে এসে পৌঁছালে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ার পরও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, পুলিশ হান্নানকে ছাড়ার পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের স্ত্রী ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে হান্নানকে বের করে নিয়ে আসেন।

সুনামগঞ্জের বোরো ফসলহানির পর গত ২ জুলাই দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমদ বাদী হয়ে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, ঠিকাদারসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ২১ নম্বর আসামি হলেন মেসার্স হান্নান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার আব্দুল হান্নান।

দুদকের মামলায় পাউবোর ১৫জন ছাড়াও সুনামগঞ্জের ১৩জন, ঢাকার ৯জন, সিলেটের ৬ জন, কুমিল্লার ৩জন, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার ও সাতক্ষীরার ২জন করে এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, পটুয়াখালি, খুলনা ময়মনসিংহ, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার একজন করে ঠিকাদারকে আসামি করা হয়।

অভিযুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে বেশি কাজ পেয়েছিলেন ফরিদপুরের খন্দকার শাহীন আহমদ, টাঙ্গাইলের মো. আফজালুর রহমান, সুনামগঞ্জের সজীব রঞ্জন দাশ ও সিলেটের আব্দুল হান্নান। হান্নান নয়টি বাঁধের কাজ পেয়েছিলেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, হান্নান ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় গত ১৪ নভেম্বর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সিলেটের তামাবিল ইমিগ্রেশন দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিলেট আদালতের পিপি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সঙ্গে স্ব-পরিবারে ভারতে ঘুরে যান। ভারতে বেড়ানোর সময় তারা কিছু ছবি তোলেন। পরে সে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়লে সমালোচনার জন্ম দেন হান্নান। তার সঙ্গে বিতর্কে পড়েন মিসবাহ উদ্দিন সিরাজও।

আলোচিত এ মামলার আসামির প্রকাশ্যে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া এবং তার সঙ্গে রাষ্ট্রের একজন আইন কর্মকর্তার বিদেশ যাওয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা- সমালোচনার জন্ম দেয়। পরে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ দেশে ফিরলেও আব্দুল হান্নান স্স্ত্রীক যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।