ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পর্যটকশূন্য কক্সবাজার, নেই কোনো আয়োজন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৮
পর্যটকশূন্য কক্সবাজার, নেই কোনো আয়োজন পর্যটকশূন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত-ছবি-বাংলানিউজ

কক্সবাজার: সমুদ্রের লোনা জলে গা ভাসানো, বালুকা বেলায় দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখা, আর বছরের শেষ সূর্যকে বিদায় জানাতে প্রতি বছর কক্সবাজারে সৈকতজুড়ে থাকে লাখো প্রাণের কোলাহল।

কিন্তু নির্বাচনের কারণে এই বিশেষ দিনেও একদম পর্যটকশূন্য কক্সবাজার। সমুদ্র সৈকতের খোলা মঞ্চেও নেই কনসার্ট বা কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজন, হোটেল-মোটেলগুলোতেও নেই বাড়তি কোনো চাপ।

তবে অল্প কিছু পর্যটক যারা আছেন, তারা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে ইনডোর বা আউটডোর কোনো অনুষ্ঠানও রাখা হয়নি বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে কনসার্টসহ বিনোদনমূলক নানা ব্যবস্থা থাকে। লাখো পর্যটক এখানে সমাগম হয়। কিন্তু এবার নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে থার্টিফার্স্ট নাইটে কোনো আয়োজন রাখা হয়নি।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং এ নির্বাচনের ফলাফল তৈরি করতে অনেক রাত পর্যন্ত সময় লেগে গেছে। এ প্রক্রিয়ায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবাই ব্যস্ত ছিল। এমনকি পর্যটকদের যারা নিরাপত্তা দেবে টুরিস্ট পুলিশও এ কাজে ব্যস্ত ছিল। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে নির্বাচন কমিশন নিষেধাজ্ঞা জারি করে।  

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো কনসার্ট বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় বর্তমানে কিছু পর্যটক যারা কক্সবাজারে অবস্থান করছেন তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। আবার অনেকে নিরিবিলি পরিবেশ পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

ঢাকা থেকে স্বস্ত্রীক কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন রাজীব হাসান। সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে তার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তিনি বলেন, ফাঁকা সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছি, খুব ভালো লাগছে। অন্যান্য বছর এদিনে এখানে অনেক পর্যটক থাকে, আজ ফাঁকা থাকবে জেনেই কক্সবাজার এসেছি। সবাইকে নিয়ে খুব এনজয় করছি।

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত আছেন ফরিদপুরের আতিকুর রহমান। সেখান থেকে সহকর্মীদের সঙ্গে সোমবার সৈকতে বেড়াতে এসেছেন। আতিক জানান, থার্টি ফার্স্ট উপলক্ষেই এখানে আসা। কিন্ত্র এসেই দেখি পুরো সৈকত ফাঁকা। কোনো আয়োজন নেই। তবুও আমরা মজা করছি, তবে কনসার্ট বা অন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকলে আরও ভালো লাগতো।

পর্যটন ব্যবসায়ী বদরুল আলম মিল্কি বাংলানিউজকে জানান, নির্বাচনের কারণে ২৮ ডিসেম্বর থেকে আজ (সোমবার) পর্যন্ত সেন্টমার্টিন-টেকনাফ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কাল থেকে আবার জাহাজ চলাচল শুরু হবে। যে কারণে এই কয়দিন আশানুরূপ পর্যটক নেই বললেও চলে। এছাড়া আজ থার্টি ফার্স্ট নাইটেও কোনো পর্যটক নেই। রোহিঙ্গা সমস্যার কারণেও কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের উপর বিরূপ প্রভাব আছে। তবুও আমরা আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে পর্যটনের সুদিন আসবে।

কক্সবাজার তারকামানের হোটেল দি কক্সটুডে’র পরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য বছর এইদিনে হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসগুলোতে শতভাগ বুকিং থাকে। কিন্তু এবছরের চিত্র ভিন্ন। নির্বাচনের কারণে এখানও কোনো পর্যটক নেই। এমনকি প্রশাসনের নির্দেশনার কারণে সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চে এবং হোটেলগুলোতে ইনডোর কোনো আয়োজনও রাখা হয়নি।  

তবে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. ফকরুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবুও সীমিত পর্যায়ে হলেও সৈকত এবং আশপাশের এলাকাগুলোতে টুরিস্ট পুলিশের নজরদারি আছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮
এসবি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।