ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ, যানচালকদের ভোগান্তি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৯
বগুড়ায় জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ, যানচালকদের ভোগান্তি বগুড়ায় জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছে গ্যাস স্টেশনগুলো। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন এবং ট্যাংকলরি ভাড়া বাড়ানোসহ ১৫ দফা দাবিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ করেছে বগুড়ার পাম্পগুলো।

রোববার (০১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বগুড়ায় পেট্রোল ও ডিজেলসহ সব ধরনের জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহন চালক ও মোটরসাইকেল আরোহীরা।

জ্বালানি তেলের সঙ্কটে দূরপাল্লার পরিবহনগুলো রাস্তার দু'পাশে বন্ধ রয়েছে।

শহরতলীর বনানী, মেডিক্যাল, চারমাথাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত বগুড়া ফিলিংস্টেশন, মেহেরা পাম্প, মেসার্স হক অ্যান্ড কোং নামের জ্বালানি তেলের পাম্পগুলো ঘুরে দেখা গেছে সবগুলোই তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছে। প্রত্যেক পাম্পে রয়েছে ১৫ দফা দাবি আদায়ের পোস্টার।

জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের স্থানীয় নেতারা জানান, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিপণন কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন।

বগুড়া ফিলিংস্টেশন এর স্বত্তাধিকারী এ, বি, এম সিদ্দিক ও মেসার্স হক এন্ড কোং নামের জ্বালানি তেলপাম্পের ম্যানেজার মো. মোস্তফা হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার সকাল থেকেই তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
জ্বালানি তেল ব্যবহারকারী পরিবহনমালিকসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের যানবাহনে যেটুকু তেল রয়েছে তাতে হয়তো একদিন চলবে। কিন্তু যদি তেল বিক্রি অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখা হয় তাহলে জ্বালানি তেলনির্ভর সব যানবাহনের চাকা বন্ধ হয়ে যাবে।

এর আগে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে গত ২৬ নভেম্বর বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের ঘোষিত ১৫ দফা দাবি ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রতন জানিয়েছিলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সব ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিপণন কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে যে ১৫ দফা দাবি ঘোষণা করা হয় সেগুলো হলো: জ্বালানী তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে সাত শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান- বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করা, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের পাঁচ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা প্রথা প্রণয়ন,  ট্যাংকলরির ভাড়া  বাড়ানো, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেওয়া বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেওয়া বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে পেট্রোল পাম্পের প্রবেশদ্বারের ভূমির জন্য ইজারা নেওয়ার প্রথা বাতিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতিত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান থেকে লাইসেন্স নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল, বিএসটিআই থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক পাঁচ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, সুনির্দিষ্ট দপ্তর ব্যতিত সরকারি অন্য দাপ্তরিক প্রতিষ্ঠান থেকে ডিলার বা এজেন্টদের অযথা হয়রানি বন্ধ, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু, পেট্রোল পাম্পের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ও বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পৌরসভার চাঁদা নেওয়া বন্ধ করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
কেইউএ/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।