শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়টির নব নির্মিত ভবন পরিদর্শন করেন লালমনিরহাট এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খাঁন।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ও স্থানীয়রা জানান, চাহিদা ভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে কিসামত চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার তলার ভিত্তির ওপর দ্বিতল ভবনের ৫টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল বিভাগ।
নির্মাণ কাজ শুরু থেকে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে বলে স্থানীয় অভিভাবকরা অভিযোগ করলেও কর্নপাত করেনি স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ। বিশাল ভবন তৈরি করলেও নেই শিক্ষার্থীদের ওয়াশ রুম বা টয়লেট। নেই প্রতিবন্ধীদের উঠার সিঁড়ি। ভবনের সব পিলার আঁকাবাঁকা হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ। ছাদ ঢালাই ৫ ইঞ্চির দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে ৩/৪ ইঞ্চির ঢালাই দেওয়া হয়েছে। পাতলা ঢালাই করায় তার রড বাইরে দৃশ্যমান। প্রকৌশলীরা ছাড়াই দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাই দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ফলে দ্বিতীয় তলার শেষ কক্ষে ছাদে সাঁটিং ভালো না হওয়ায় ছাদ হয়েছে ঢেউ খেলানো তিন ইঞ্চির। ফলে ঢেউয়ের এ ফাঁকাস্থান তথা ৫ ইঞ্চি পূরণে দেওয়া হয় নেটসহ দুই ইঞ্চির প্লাস্টার। যা অল্প কিছু দিনের মধ্যে পলেস্টারা খুলে শিক্ষার্থীদের ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা করছেন অভিভাবকরা।
স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১ ডিসেম্বর ‘বিদ্যালয়ের ভবনের ছাদ ঢালাইয়ে অনিয়ম ঢাকতে প্লাস্টার!' শিরোনামে বাংলানিউজে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রকৌশল দপ্তর। যার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়টির নব নির্মিত ভবন পরিদর্শনে আসেন লালমনিরহাট এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খাঁন। এ সময় স্থানীয় অভিভাবকরা অনিয়মগুলো ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে প্রতিকার দাবি করেন।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে বলেন, ঢালাই কাজে অনিয়ম ঢাকতে প্লাস্টার করার বিষয়টি ও বাঁকা পিলারসহ কাজের যাবতীয় অনিয়ম পরিদর্শনে আসা নির্বাহী প্রকৌশলীকে দেখানো হয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ এ কাজে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি প্রতিকার করার আশ্বাস দিয়েছেন।
পরিদর্শন শেষে লালমনিরহাট এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খাঁন বাংলানিউজকে বলেন, ঢালাইয়ের নিচে কোনো ভাবে প্লাস্টার করা যাবে না। একটা অনিয়ম ঢাকতে আরো একটা অনিয়মের আলামত পাওয়া গেছে। এখন পলেস্টারা খুলে পড়ার সম্ভাবনা না থাকলেও আগামীতে সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি সরেজমিনে দেখেছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে। তারা যা নির্দেশনা দেবেন সেই অনুযায়ী পরবর্তী কাজ করা হবে। এতে প্রকৌশলীরা সংশ্লিষ্ট থাকলে সেটাও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
এসএইচ