ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সেই কারখানার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল শ্রম মন্ত্রণালয়

নাজিম উদ্দিন ইমন, কেরানীগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
সেই কারখানার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল শ্রম মন্ত্রণালয়

কেরানীগঞ্জ, ঢাকা: প্রায় এক মাস আগে কেরানীগঞ্জের ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ কারখানাটি পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ায় মামলা করেছিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কারখানাটি পরিদর্শন শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কেএম আলী আজম সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।

আলী আজম বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় এক লাখ কলকারখানা রয়েছে।

এসব কারখানাগুলোতে কাজ করে প্রায় ৮০ লাখ লোক। অথচ এসব কারখানা পরিদর্শনের জন্য আমাদের পরিদর্শক আছে কেবল ৩২৩ জন। আমাদের পরিদর্শকের স্বল্পতা রয়েছে। তারপরও গত নভেম্বর মাসের ৫ তারিখ কারখানাটি পরিদর্শনে আসে আমাদের পরিদর্শক দল। সেখানে কারখানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগ পরিলক্ষিত হলে একটি বিভাগীয় মামলা করা হয়। কিন্তু এর মধ্যেই এতো বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেলো। দুর্ঘটনার পরিমাণ শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহা-পরিদর্শক শীবনাথ রায়।

বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকার ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানায় আগুন লাগে। ঘটনার সময় শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। তখন হঠাৎই গ্যাস রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।  

ইঞ্জিনিয়ার এসে শ্রমিকদের আগুন লাগার খবর দেয়। এরপর শ্রমিকরা পানি ও কারখানায় থাকা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে তখনই তারা দগ্ধ হয়।

এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০ হাজার স্কয়ার ফিট কারখানাটির ভেতরের সব মালামাল ও যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জাকির হোসেন (২২) নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রায় ৩৫ জনকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে আহতদের মধ্য থেকে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়।

‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানার গত দুই বছরে তিনবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যার দুটোই ঘটেছে চলতি বছরে। প্রতিটি অগ্নিকাণ্ড ছিল ভয়াবহ।  

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর কারখানাটিতে প্রথম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো আগুন লাগে। তবে ওই দু’টি অগ্নিকাণ্ডে কারখানার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সর্বশেষ বুধবার তৃতীয়বারের মতো আগুন লাগে কারখানাটিতে।

আরও পড়ুন>

** কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড: নিহত বেড়ে ১১​
** কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯

** কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরও ৩ জনের মৃত্যু 
** একই কারখানায় ২ বছরে তিন বার আগুন
** আগুনের সূত্রপাত ‘গ্যাস রুমে’, নেভাতে গিয়েই দগ্ধ শ্রমিকরা
***কেরানীগঞ্জে আগুন: কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ক্ষতি বেশি
***কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানার আগুনে নিহত ১, দগ্ধ ৩২
***কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড: অনুমোদন ছিল না ওই কারখানার

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।