জানা যায়, রাজধানীর পশ্চিম মাটিকাটা এলাকায় পৈত্রিক বাড়ির সামনে প্রতি শুক্রবার এই ভোজের আয়োজন করা হয়। বাদ জুমা খাবার রান্নার আয়োজন শুরু হয়, যা বিতরণ শুরু হয় আসরের নামাজের পর থেকে।
খোকন জানান, তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন যে মুনাফা হয় তার একটি অংশ এই আয়োজনের জন্য আলাদা করে রাখা হয়। সাতদিনের টাকা জমিয়ে প্রতি শুক্রবার আয়োজন করা হয় খাবারের। প্রায় দেড় মাস আগে এই উদ্যোগ শুরু করেন জহিরুল ইসলাম খোকন।
এমন উদ্যোগের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে খোকন বলেন, একদিন আমার কাছে এক ভিক্ষুক এলে আমি তাকে কিছু নগদ টাকা দেই। কিন্তু সে আমার কাছ থেকে টাকা না নিয়ে ভাত খেতে চাইলেন। তখনই প্রথম এই ভাবনা এলো যে, এভাবে টাকা না দিয়ে একবেলা খাবারের আয়োজন করতে পারি আমি। আল্লাহ আমাকে যে সীমিত সামর্থ্য দিয়েছেন তার ভেতরেই এটা করতে পারি।

কারও কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে খোকন বলেন, কেউ কেউ আগ্রহ দেখিয়েছেন, তবে কারো কাছ থেকেই কোনো ধরনের আর্থিক সাহায্য নিচ্ছি না। কারণ এতে বিতর্ক তৈরি হতে পারে। যা করার আমার সামর্থ্যের ভেতর থেকেই করছি। যারা আর্থিক সাহায্য দিতে চান তারা নিজেরাও এমন কিছু করতে পারেন। তবে এলাকাবাসীর অনেকে কাজে সাহায্য করেন। রান্নাবান্নার কাজে বেশ সাহায্য করেন তারা।
খোকনের আয়োজনে অন্তত দুইবার খাবার খেতে আসা শিশু সাদ্দাম বলেন, ‘আমরা বেগুনটিলা বস্তিত থাহি। একজন কইল শুক্কুরবার এইনে খাবার দেয়। আগেরবার আইছিলাম, আবার এহন আইলাম। উনি (খোকন) খুব ভালা মানুষ’।
এদিকে জহিরুল ইসলাম খোকনের এমন মহৎ এবং সামাজিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তার প্রতিবেশী এবং গণমাধ্যমকর্মী ইমরাদ তুষার বলেন, খোকন ভাই মাঝে মধ্যেই এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। এর আগেও বাড়িভাড়া নিয়ে তার যে উদ্যোগ ছিল সেটি বলতে গেলে আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল যে, পিতামাতার যত্নে আমরা কতটা অবহেলা করি। কোনো প্রয়োজন বা স্বার্থ ছাড়াই তিনি এখন আবার এই খাবারের আয়োজন করে যাচ্ছেন। খুব ভালো কাজ করছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
এসএইচএস/জেডএস