ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘বসুন্ধরা গ্রুপের এই কম্বল গায়ে দিয়ে আরাম পাবো’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
‘বসুন্ধরা গ্রুপের এই কম্বল গায়ে দিয়ে আরাম পাবো’

কুষ্টিয়া: সত্তরোর্ধ সামেলা বেওয়া। শহরের সুখনগর বস্তি এলাকার বাসিন্দা তিনি।

বিধবা মেয়ে ও নাতনীদের নিয়ে খুপড়ি ঘরে বসবাস করেন তিনি।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল মাঠে বসুন্ধরা গ্রুপের কম্বল পেয়ে আবেগে আপ্লূত হয়ে বলে উঠলেন শীতের সময় এই কম্বল গায়ে দিয়ে আরাম পাবো।

কম্বল পেয়ে তিনি বলেন, আজকে কম্বলডা পায়ে রাইতে শান্তিতে ঘুমাতি পারবোনে। আল্লাহ তোমারে ভালো করবে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে এবং কালের কণ্ঠ শুভ সংঘের আয়োজনে জেলার বিভিন্ন  উপজেলায় দুস্থ দুই হাজার শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।

সকালে এসব কম্বল বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক, শিক্ষা ও আইসিটি) শারমিন আক্তার। মহৎ উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।

গরম কাপড় জড়িয়ে উষ্ণতা দিতে তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, এই শীতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্টে থাকে ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র মানুষগুলো। এ শ্রেণীর মানুষগুলো এমনিতেই অসহায়ভাবে জীবন-যাপন করে থাকে। দিন যতোই যাচ্ছে ততই শীত বাড়ছে। যাদের শীত নিবারণের ব্যবস্থা নেই। তাই বসুন্ধরা গ্রুপের উপহার শীতার্তদের জন্য কম্বল সবার উপকারে আসবে বলেও জানান তিনি।

কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান বলেন, বসন্ধুরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান স্যারের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আমরা সারাদেশে দেড় লাখ কম্বল বিতরণ করছি। যাতে শীতার্ত মানুষগুলোর কষ্ট একটু হলেও লাঘব হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের এই উপহার কুষ্টিয়ার ২ হাজার মানুষের কাছে আমরা পৌঁছে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে শুভসংঘের মাধ্যমে মানবিক সকল কর্মসূচি চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

শুভ সংঘ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল আলম টুকু শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, আত্মমানবতার সেবায় নিজে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই কম্বল বিতরণ করছে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি বন্যার্তদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে থাকে। এজন্য আপনারা সকলেই বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের জন্য দোয়া করবেন।

শীতবস্ত্র কম্বল হাতে পেয়ে বৃদ্ধা রাহেলা খাতুন বলেন, এই শীতে যারা বাড়ি থেকে ডেকে এনে কম্বল দিল। আল্লাহ তাদের ভালো রাখুক। এতো শীতে খুব কষ্ট করছিলাম, আজ থেকে একটু হলেও শান্তিতে ঘুমাতে পারবোনে। বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য দোয়া কামনাও করেন তিনি।

মজমপুর রেললাইনের ধারে বস্তির শিশুদের নিয়ে পরিচালিত শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী বাবলী বলেন, তিন ভাই বোন মা বাবা নিয়ে সংসার। রঙিন কম্বল হাতে পেয়ে খুবই আনন্দ লাগছে। রাইতে নতুন কম্বল মুইড়ি দিয়ে শুয়ে থাকবো। কম্বল পেয়ে খুবই খুশি তার মতো বিদ্যালয়ের আরও দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীরা।

হরিজন সম্প্রদায়ের রাকিব ও বাদল বাঁশফোর কম্বল পেয়ে খুশী। ওই এলাকার গৃহবধূ জোসনা বাঁশফোর বলেন, অভাবের তাড়নায় দুই বেলা খাতে পাইনি। শীতের কাপড় কিনবো কি করে? তাই ঠাণ্ডার ভয়ে বিকেল হলেই ঘরে দরজা দিয়া থাকি। দম ফেলতে পারিনি। কম্বলডা পাইয়ে এখন মেলাখানি চিন্তামুক্ত হলাম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধি আল মামুন সাগর, কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এফতে-খাইরুল ইসলাম, শারিকা, মহিলা বিষয়ক অফিসার মর্জিনা খাতুন, কালের কণ্ঠ শুভ সংঘ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাকলী খাতুন, সহ সভাপতি শম্পা আফরিন, সাংগঠনিক সম্পাদক অন্তু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিল্পী সরকার, প্রচার সম্পাদক এসএম জামাল, শারিকা,  নিউজ টোয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার জাহিদুজ্জামান, ডেইলি সানের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।  

প্রথমদিন এতিমখানা, মাদরাসাসহ আশপাশের এলাকার বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও অতি দরিদ্ররা, হরিজন সম্প্রদায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।  

এছাড়াও পর্যায়ক্রমে মিরপুর, ভেড়ামারা, দৌলতপুর, কুমারখালি ও খোকসা উপজেলাতে কম্বল বিতরণ করা হবে।

‌বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।