ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

জয়পুরহাটে অরক্ষিত রেলগেটগুলো যেন মরণ ফাঁদ

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২২
জয়পুরহাটে অরক্ষিত রেলগেটগুলো যেন মরণ ফাঁদ রেলগেটগুলো যেন মরণ ফাঁদ

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম স্টেশন থেকে পাঁচবিবি উপজেলার আটাপাড়া পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটারে লেভেল ক্রসিং রয়েছে ২৩টি। যার বেশির ভাগই অরক্ষিত।

এসব অরক্ষিত রেলগেট মৃত্যু ফাঁদ হয়ে আছে বছরের পর বছর ধরে। যে কারণে এসব রেলগেটে মারা যাচ্ছে শত শত মানুষ।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন— আর কত মৃত্যুর মিছিল হলে নড়েচড়ে বসবে রেল বিভাগ। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে এসব অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে অটোমেশন পদ্ধতি চাল করা হবে বলে জানালেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।  

জয়পুরহাট সদর উপজেলার তেঘর পালপাড়া অরক্ষিত রেল ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিনই পারাপার হচ্ছে শ্যালো ইঞ্জিনিচালিত ভটভটি, বালুবাহী ট্রাক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ শত শত যানবাহন ও মানুষ।

শুধু তেঘর পালপাড়াই নয় এমন দৃশ্য জয়পুরহাট সদরের তাজপুর রেল ক্রসিং, পাঁচবিবি উপজেলার খাস বাগুড়ীসহ জয়পুরহাটের মোট ২৩টি লেভেলক্রসিংয়ের মধ্যে বেশির ভাগই অরক্ষিত রেল ক্রসিং দিয়ে প্রতিনিয়ত এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন ও মানুষজন।

এর আগে শুধুমাত্র অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ের কারণেই ২০০৬ সালের ১১ জুলাই আক্কেলপুর রেল স্টেশনের উত্তর পাশে আমুট্ট এলাকায় যাত্রী বোঝাই বাস ও ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন ৪০ জন নিরীহ যাত্রী ও আহত হয়েছিলেন ৩৮ জন।  

একই কারণে জয়পুরহাট শহরের কাশিয়াবাড়ী রেল ক্রসিংয়ে ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বালু বোঝাই ট্রাক ও ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হন নয়জন এবং আহত হন ১৭ জন।  

সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেল গেটে বাস-ট্রেনের সংঘর্ষে মারা যান ১২ জন ও আহত হন আরও তিনজন যাত্রী। এসব অপ্রত্যাশিত মৃত্যু ঠেকাতে দ্রুত গেট নির্মাণ ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।



জয়পুরহাট সদর উপজেলার তেঘর পালপাড়ার বাসিন্দা জিহাদ হোসেন, তাজপুর রেল ক্রসিং এলাকার আব্দুর রউফ, পাঁচবিবি উপজেলার খাস বাগুড়ী এলাকার আফসানা বেগমসহ অনেকেই জানান, এসব অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু এ নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগই নেই।

এ বিষয়ে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের জয়পুরহাট জেলা সভাপতি নূর-ই-আলম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রেল ভ্রমণে আগের থেকে বর্তমানে অনেক বেশি মানুষের যেমন আস্থা ফিরেছে, ঠিক তেমনই এসব দুর্ঘটনায় রেল ভ্রমণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে মানুষজন। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত অরক্ষিত রেলগেটগুলোর দিকে নজর দেবেন বলে আশা করছি।  
 
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোনের জিএম আব্দুল আউয়াল ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে এসব অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা হবে।  

উল্লেখ্য, সান্তাহার থেকে বিরামপুর পর্যন্ত পাকশী জংশনে মোট ৩৮টি রেলগেট আছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ১৮টি ইঞ্জিনিয়ারিং রেলগেটে গেটম্যান রয়েছে। বাকি ২০টি ট্রাফিক রেলগেটে গেটম্যান নেই। সেগুলো শুধুমাত্র সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দেখেই পারপার হতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।