ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেডিক্যালে সুযোগ পাওয়া মেধাবীদের সহায়তা দিল বসুন্ধরা গ্রুপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
মেডিক্যালে সুযোগ পাওয়া মেধাবীদের সহায়তা দিল বসুন্ধরা গ্রুপ ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া অদম্য মেধাবীদের সহায়তা দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। কালের কণ্ঠের পাঠক ফোরাম শুভসংঘের ব্যবস্থাপনায় ১১ শিক্ষার্থীকে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

ওই শিক্ষার্থীদের প্রথমিকভাবে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি, বইপত্র এবং এক মাসের হোস্টেল খরচ বাবদ প্রত্যেককে ৫৮ হাজার টাকা উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। এছাড়া পড়াশোনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিমাসে তাদের ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেবে বসুন্ধরা গ্রুপ।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড মিলনায়তনে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে এই সহায়তা শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।  

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, নিউজ২৪ এর এক্সিকিউটিভ এডিটর রাহুল রাহা, বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যানের সেক্রেটারি মাসুদুর রহমান মান্না প্রমুখ। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন- রাজশাহীর বাঘা উপজেলার অন্তরা খাতুন (এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ, সিলেট), ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোছা. সাবিনা ইয়াসমিন (ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ), বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সুক্লা চিন্তাপাত্র (বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ, ফরিদপুর), দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার শারমিন আক্তার (পাবনা মেডিক্যাল কলেজ), বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সাদিয়া আফরিন হারিছা (রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ), জয়পুরহাট সদর উপজেলার শারমিন আক্তার সুমি (রংপুর মেডিক্যাল কলেজ), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তাজগীর হোসেন (খুলনা মেডিক্যাল কলেজ), যশোরের কেশবপুর উপজেলার ইমামা ইসলাম ইমা (রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ), নাটোর সদর উপজেলার রাকিব হোসেন (চাঁদপুর মেডিক্যাল কলেজ), পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার মোছা. শাবনূর (শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, জামালপুর) এবং ঢাকার ধানমণ্ডির দীপিতা রহমান (বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ, ফরিদপুর)।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম শিক্ষার্থীদের অভিবাদন জানিয়ে বলেন, এখানে যারা বসে আছে, তারা সবাই অদম্য মেধাবী বলেই এখানে স্থান হয়েছে। তোমাদের এখন সামনে একটাই পথচলা- তোমরা আগামীকে জয় করে এগিয়ে যাবে। বসুন্ধরা গ্রুপ তোমাদের পাশে আছে। সেরা হওয়ার যে যাত্রা, তা তোমাদের ধরে রাখতে হবে যেন সারা বাংলাদেশকে আরও বড় পরিসরে তোমরা তা দেখাতে পারো। কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী বলেন, যে কোনো যাত্রায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকে। তবে তোমাদের আগামীটা সুন্দর হোক এই প্রত্যাশা করি। তোমাদের সব ভয়-জড়তা কাটিয়ে সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। বসুন্ধরা গ্রুপের এই সহায়তায় তোমরা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবে। আনন্দ ও সাহসের সঙ্গে পড়ালেখা করে দেশ ও দেশের মানুষকে বদলে দেবে বলে আমি মনে করি।

নিউজ২৪- এর এক্সিকিউটিভ এডিটর রাহুল রাহা বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ সবসময়ই মেধাবীদের পাশে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পক্ষ থেকে আপনাদের (মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগপ্রাপ্ত ১১ জন শিক্ষার্থীকে) যে সহযোগিতা করা হচ্ছে, আমরা প্রত্যাশা করি এটা নিয়ে আপনারা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশ ও মানুষের পাশে দাঁড়াবেন।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের সেক্রেটারি মাসুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনারা জীবনের সঙ্গে অনেক যুদ্ধ করে এই পর্যন্ত এসেছেন। মেডিক্যালে ভর্তির পর থেকে আরও একটা যাত্রা আসবে জীবনে, সেখানেও অনেক যুদ্ধ থাকবে। তবে জীবনে যাদের অবদান আছে, তাদের কথা কখনো ভুলে যাবেন না, শেকড়ের কথা কখনো ভুলে যাবেন না। এই বিষয়টা যতদিন মনে থাকবে, ততদিন আমরা মানুষ থাকবো। আর ডাক্তার হওয়ার পর এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করে গেলেই মানুষের উপকার হবে, যার থেকে বড় পাওয়া আর কিছু নেই। আপনারা মানুষের জন্য কিছু করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের নির্দেশে আমরা অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের খুঁজে এনেছি। তাদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ দাঁড়াবে। আমরা যে সহায়তাটা তাদের দিচ্ছি, এটা মূলত উপহার। এই উপহারটা আমরা তাদের দিচ্ছি তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এবং প্রকৃতপক্ষে দেশকে আমরা এই মানুষগুলো উপহার দিচ্ছি। তারা যখন ডাক্তার হবে, তারা যখন সমাজসেবক হবে, তারা যখন রাষ্ট্রের কাজ করবে, মানুষের কাজ করবে, তখন রাষ্ট্র এবং মানুষের উপকার হবে।

এ সময় তিনি প্রতিবছর এই কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া যে কোনো মানুষের পাশে, বিশেষ করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপ সবসময় পাশে আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেন সাদিয়া আফরিন হারিছা। তিনি বলেন, রিকশা চালিয়ে বাবা আমাকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। আমার পরিবারসহ যারা সাহায্য করেছেন, আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আজকে বসুন্ধরা গ্রুপ আমাকে সাহায্য করেছে, আমি যেনো বড় হয়ে সবাইকে সাহায্য করতে পারি সেটিই আমার লক্ষ্য। লেখাপড়া শেষে আমি গরিবের ডাক্তার হয়ে কাজ করতে চাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
এইচএমএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।