ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

অটোরিকশায় পাওয়া তিন লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন এসআই মারুফ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২২
অটোরিকশায় পাওয়া তিন লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন এসআই মারুফ এসআই মারুফ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে অটোরিকশায় পাওয়া সোয়া তিন লাখ টাকা  মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন শাহ আবদুল্লাহ আল মারুফ নামে এক পু্লিশ কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় সহকর্মী, পরিচিতজন ও ওই টাকার মালিকের কাছ থেকে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

 

৩৮তম ক্যাডেট ব্যাচের শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শক (এসআই) মারুফ লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইনে কর্মরত আছেন। তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায়।  

এ ব্যাপারে রোববার (৮ মে) দুপুরে পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ ও টাকার মালিক মো. এরশাদ হোসেনের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।  

এসআই শাহ আবদুল্লাহ আল মারুফ জানান, গত ২২ এপ্রিল বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে তিনি লক্ষ্মীপুর উত্তর স্টেশন থেকে রামগঞ্জ শহরে যাওয়ার উদ্দেশে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ওঠেন। ওই অটোরিকশায় আরও একজন যাত্রী ছিলেন। ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে অটোরিকশাটি রামগঞ্জ চৌরাস্তা ট্রাফিক পুলিশ বক্সের কাছে গেলে অপর যাত্রী নেমে যান। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসায় ওই যাত্রী দ্রুত অটোরিকশা থেকে নেমে চলে যান। এসময় তিনি তার সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ নিতে ভুলে যান। পরে এসআই মারুফ ব্যাগটি দেখতে পেয়ে নিজের কাছে রেখে দেন। ব্যাগে কাপড়ের পাশাপাশি অনেকগুলো টাকা ছিল। তখন ইফতারের সময়ও হয়ে যায়। ইফতারের পর ব্যাগের মালিক ট্রাফিক পুলিশ বক্সের কাছে এসে ব্যাগটি খুঁজতে থাকেন। এ সময় মারুফ এসে ব্যাগটি তাকে বুঝিয়ে দেন।  

মারুফ বলেন, ব্যাগের মালিক মো. এরশাদ হোসেন রাজধানীর ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করেন। অটোরিকশায় তার সঙ্গে সামান্য কথা হয়েছে। এসময় তিনি রামগঞ্জ শহরের এক ব্যবসায়ীর নাম বলেছেন, যাকে আমি চিনি। তাই এরশাদ হোসেনের ব্যাগটি পেয়ে আমি আমার হেফাজতে রাখি। টাকাভর্তি ব্যাগটি প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমার দায়িত্ব ছিল। তাই ইফতার শেষে আমিও টাকার মালিককে খুঁজতে থাকি। একজন মানুষ হিসেবে আমি আমার দায়িত্বটুকুই পালন করেছি।  

টাকার মালিক মো. এরশাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাড়ি ফরিদপুর। রামগঞ্জ উপজেলার দাসপাড়ায় আমার আত্মীয়ের বাড়ি আছে। আমি সেখানে যাওয়ার জন্য চট্টগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুর শহরে এসে সেখান থেকে অটোরিকশায় উঠি। ওই অটোরিকশায় আরেকজন যাত্রী ছিলেন। রামগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশ বক্সের কাছে গিয়ে আমি অটোরিকশা থেকে নামার সময় টাকার ব্যাগটি নিতে ভুলে যাই। ব্যাগের মধ্যে ব্যবহৃত কাপড়সহ তিন লাখ ২৮ হাজার টাকা ছিল। ব্যাগটি হারিয়ে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

কয়েক মিনিট পরে আমি ব্যাগের সন্ধানে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের কাছে আসি। আমার সঙ্গে অটোরিকশায় যিনি ছিলেন, তিনিই আমার ব্যাগটি আমাকে বুঝিয়ে দেন।  

এরশাদ হোসেন আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, মারুফ স্যার একজন সৎ পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশের প্রতি আগে নেতিবাচক ধারণা ছিল। কিন্তু এ ঘটনার পর মনে হয়েছে, আমার ধারণাটা একেবারেই ভুল। মারুফ স্যার ইচ্ছা করলে আমার টাকা ফেরত না দিলেও পারতেন। আমি তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের মঙ্গল কামনা করি। আমি সারাজীবন তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।