ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পিকে হালদারের প্রধান সহযোগী ‘অনঙ্গ রায়’এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২২
পিকে হালদারের প্রধান সহযোগী ‘অনঙ্গ রায়’এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

পিরোজপুর: দেশের বহুল আলোচিত অর্থ পাচারের নায়ক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার ও তার প্রায় সব সহযোগীদের বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুরে। সহযোগীদের অন্যতমরা প্রায় সবাই গ্রেফতার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন তার প্রধান সহযোগী অনঙ্গ মোহন রায়।

অনঙ্গ মোহন রায় পলাতক থাকলেও দাপটের সঙ্গে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন তার পরিবারের লোকজন। তিনি গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠছে। অনঙ্গ মোহন রায় ছিলেন প্রশান্ত কুমার হালদারের কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরের পাটমিল ও ময়মনসিংহের ভালুকার কুমির প্রকল্পের ম্যানেজার। তার বাড়ি নাজিরপুরের সদর ইউনিয়নের দীঘিরজান গ্রামে।

স্থানীয়রা জানান, মাত্র ১৫ বছর আগে এই অনঙ্গ মোহন রায় অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। প্রশান্ত কুমার হালদারের মতো চিরকুমার অনঙ্গ মোহন রায়ের (৭৫) সঙ্গে ঘনিষ্টতার সূত্র ধরে প্রশান্ত তাকে (অনঙ্গ) দেখভালের দায়িত্ব দেন তার দুটি মিল ও কুমির প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। অল্প সময়ের ব্যাবধানে অনঙ্গ মোহন রায় স্থানীয়দের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন শিল্পপতি অনঙ্গ নামে। অনঙ্গর বাবা জোনার্ধন রায় ছিলেন একজন গ্রাম্য চিকিৎসক। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে অনঙ্গ ছিলেন মেঝো। বড় ভাই মৃত বিধান রায় ছিলেন একজন গ্রাম্য চিকিৎসক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক জানান, অনঙ্গ মোহন রায় এক সময় দু’বেলা খেতেও পারতেন না। সেই অনঙ্গ রাতারাতি স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাড়িতে বিশাল ভবন তৈরি করেন। শুনেছি ঢাকায়ও কয়েকটি ফ্ল্যাট আছে। এলাকায় নামে-বেনামে জমি কিনেছেন। আর এসব অর্থের মালিক হয়েছেন পিকে হালদারের সহযোগিতায় ও তার অর্থ লুট-পাট করে।

সরেজমিনে শুক্রবার (২৭মে) তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার দীঘিরজান গিয়ে দেখা গেছে তার বাড়িতে একটি বিরাট দ্বিতল ভবন। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বর্গফুটের ওই সুসজ্জিত বাড়িটিতে থাকেন তার ছোট ভাই বিকাশ রায়ের পরিবার।  

ছোট ভাই বিকাশের স্ত্রী গৌরি রায় জানান, আলোচিত পিকে হালদার বিপুল পরিমাণের অর্থ কেলেংকারির পর থেকে ভাসুর অনঙ্গ রায় পলাতক রয়েছেন। কেননা পিকে হালদারের কাছ থেকে ভাসুর ৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। ওই টাকার জন্য তিনি গ্রেফতার হতে পারেন এমন ভয়ে প্রায় দু’বছর ধরে তিনি পলাতক রয়েছেন। তবে তিনি কোথায় আছেন তা জানা নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, পিকে হালদার তেমন খারাপ লোক ছিলেন না। যখন থেকে এই অনঙ্গ মোহন রায়ের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠেছে তখন থেকেই অনঙ্গ মোহন রায়ের কু-পরামর্শে খারাপ পথে গেছেন।

অনঙ্গ মোহন রায়ের বাড়িতে সংবাদকর্মীরা গেলে তার পরিবারের লোকজনের কারণে স্থানীয়রা কোনো সংবাদকর্মীর কাছে মুখ খুলতে পারেন না এমনটি অভিযোগ স্থানীয়দের।

অনঙ্গ মোহন রায়ের প্রতিবেশী খোকন মিস্ত্রির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, অনঙ্গ মোহন রায় মাত্র ১৩-১৪ বছর আগে অন্যের বাড়িতে লজিং থাকতেন। আজ আলাউদিনের চেরাগ পেয়ে বাড়িতে বিরাট বিল্ডিং করেছেন। নামে বেনামে অনেক জমি কিনেছেন। এলাকায় আমরা তাকে শিল্পপতি অনঙ্গ হিসেবে চিনতাম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনঙ্গ মোহন রায়ের বাড়ির এক নারী জানান, পারিবারিকভাবে শুনেছি অনঙ্গ রায় গ্রেফতার এড়াতে ভারতে গেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।