ঢাকা: বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের তৎকালীন যুগ্ম-আহ্বায়ক আরিফ রায়হান দীপ হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। দশ বছরেও বিচার না পেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দীপের বাবা শেখ আলী আজম।
সন্তান হত্যার বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে তিনি বলেছেন, দীপ জেগে আছে ছাত্রলীগের আরও হাজার সন্তানের বুকে। আক্ষেপ একটাই, সুষ্ঠু বিচারের জন্য আমি এখনো দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার সন্তান হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, বুয়েটে গেলে দীপের ঘ্রাণ পাই এখনও।
এর আগে শনিবার (২ জুলাই) দিবসটিকে ঘিরে সকালে বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে স্থাপিত দীপের ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। এ সময় সেখানে দীপের বাবার উপস্থিতিতে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এদিন বিকেলে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে দীপের স্মৃতিতে ভার্চ্যুয়াল স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ভার্চ্যুয়াল স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বুয়েটের সাবেক ছাত্রনেতা- খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ, এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, আতাউল মাহমুদ, মনিরুজ্জামান মোহন, কাজী খায়রুল বাশার, হাবিব আহমেদ হালিম মুরাদ, মনিরুজ্জামান মনির, রনক আহসান, তন্ময় আহমেদ, রোদসী আলমগীর, এম এ সাইদ, তানভীর মাহমুদুল হাসান, ইমরান খান, ইমরুল কায়েস রাফি, জয় প্রকাশ, আরিফুর রহমান, সফিউল আলম, তরফদার মাহমুদ, মুন্সী আব্দুস সালেকসহ অন্যান্যরা।
এ সময় বক্তারা মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে আরিফের মাথায় ও পিঠে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আরিফ যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। পরে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা ১৭ এপ্রিল বুয়েটের মেজবাহউদ্দীন নামের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে। বুয়েটের এম রশীদ হলের ৩০১ নম্বর কক্ষে থাকা মেজবাহ হেফাজতের সমর্থক বলে জানান ডিবি কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় চকবাজার থানায় আরিফের ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ মামলায় মেজবাহকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে ডিবি কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মেজবাহ বলেছেন, ‘গত ৬ এপ্রিল ঢাকায় হেফাজতের সমাবেশে আসা লোকজনকে খাবার সরবরাহ করায় একটি হলের মসজিদের ইমামকে পুলিশে দিয়েছিলেন আরিফ ও তার বন্ধুরা। এ জন্যই তিনি আরিফের ওপর হামলা চালান।
হাসপাতালে ৮৪ দিন কোমায় থাকার পরে ২০১৩ সালের ২ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন দীপ।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২২
এনবি