ঢাকা: ঈদুল আজহার আর মাত্র একদিন বাকি, প্রায় শেষ মুহূর্তের বেচাকানায় সরগরম রাজধানীর পশুর হাটগুলো। শুক্রবার (৮ জুলাই) রাজধানীর অন্যতম অস্থায়ী কোরবানির পশুরহাট আফতাবনগরে দেখা যায় ক্রেতারা হাতে রশি নিয়ে একেকটি পশু নিয়ে বের হচ্ছেন, আর আশপাশের মানুষ দাম জানতে চাইছেন।
শুক্রবার (৮ জুলাই) সরেজমিনে আফতাবনগর ও মেরাদিয়া পশুরহাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রায় ৪-৫ কিলোমিটারের বিশাল এলাকা জুড়ে বসেছে পশুরহাট। আছে গরু, ছাগল, ভেড়ার মত প্রাণী। বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনেক কর্মীরা এসেছেন সংবাদ সংগ্রহে। অসংখ্য ক্রেতা-দর্শনার্থী, বিক্রেতাদের ভিড়ে গমগম করছে পুরো এলাকা।
কেউবা নিজের অতিযত্নে পেলেপুষে বড় করা গরু বা ছাগলটি নিয়ে এসেছেন। দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল পেরিয়ে খুঁটিতে বাঁধা পশুর পাশেই গামছা পেতে খানিকটা নিদ্রা যাচ্ছেন কেউ কেউ। পাশেই বসেছে বিভিন্ন পশুখাদ্যের দোকান। খড়, ঘাস, বিচুলি, খৈল, ভুষির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
হাতে করে গরুর গলায় ও কপালে পরানোর জন্য বাহারি রঙের মালা, ঘুঙুরও বিক্রি করতে দেখা গেছে হকারদের।
বাড্ডা থেকে ছেলে, বড়ভাই এবং পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য মিলে গরু কিনতে এসেছেন সিরাজুল ইসলাম। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, গরু কিনতে এসেছি মূলত, বাজেট ৭০ হাজার টাকা। কিছু কম-বেশি হলেও নিয়ে নেব। এর আগে দু'দিন এসে ফিরে গেছি। আজকে নিয়েই ফিরব, এমন ইচ্ছে আছে। আগে ভালভাবে দেখব। পরিবারের আরও অনেকে মিলে এসেছি। একটি উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে এখানে, ভালই লাগছে।
‘সুলতান’ নামে হলস্টেন ফ্রিজিয়ান জাতের ৪০ মণ ওজনের একটি গরু নিয়ে এসেছেন খুলনার আয়নাল হক। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, গরুটা আমার নিজস্ব খামারের। ২৫ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি। কিছু কম-বেশি হলে বিক্রি করে দেব। গতকাল রাতে এখানে এসেছি, আশা করছি, আজ বিক্রি করে ঈদ করার জন্য খুলনা ফিরতে পারব।
নিকেতনের বাসিন্দা আফরাজ আবির সন্তানসহ গরু কিনতে এসেছেন। পছন্দের পশুটি কেনার আশায় হাট চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। বাংলানিউজকে জানালেন একা কোরবানি দেওয়ার জন্য ৫০-৬০ হাজারের মধ্যে একটি গরু কিনতে এসেছেন।
এদিকে, হাটের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্টি জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। দেখা গেছে, ২০টি কাউন্টারে হাসিল সংগ্রহের জন্য ইজারাদারদের প্রতিনিধিরা বসেছেন। তারা জানিয়েছেন পশু প্রতি ৫ শতাংশ হারে মাশুল পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ, ৫০ হাজার টাকায় একটি পশু কিনলে মাশুল দিতে হবে ২৫০০ টাকা।
হাটের ফাঁকে-ফাঁকে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের একাধিক ওয়াচ টাওয়ার বসেছে। রয়েছে জাল নোট শনাক্তকরণের একাধিক স্টল। সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বাড্ডা থানা পুলিশের একটি দল। তারা জানিয়েছেন নিরাপদে অর্থ বহনের জন্য এ বছর পুলিশের এস্কট টিম নিয়োজিত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, ৮ জুলাই ২০২২
এমকে/এমএমজেড