ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২২
অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর অভিযোগ 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে মুক্তা বেগম (৩৬) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী মারা গেছেন। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) রাতে জেলা শহরের উপশম হসপিটাল অ্যান্ড মেডিক্যাল সার্ভিসেস নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।

মুক্তা জেলার রায়পুর উপজেলার চরমোহনা গ্রামের দক্ষিণ চরমোহনা গ্রামের ছমর উদ্দিন মাজী বাড়ির কৃষক মো. সোহেলের স্ত্রী। তিনি একই ইউনিয়নের ফজলুল করিমের মেয়ে। তার দুই সন্তান রয়েছে।  

এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং দায়িত্বরত গাইনি চিকিৎসক শঙ্কর কুমার বসাককে দায়ী করে বিচার দাবি করেছেন।  

চিকিৎসক বসাক মানিকগঞ্জ জেলার কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের গাইনি অ্যান্ড অবস্ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। লক্ষ্মীপুরের উপশম মেডিক্যাল সার্ভিসেস নামের ওই হাসপাতালটিতে তিনি প্রতি বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার খণ্ডকালীন রোগী দেখেন।  

মুক্তার স্বামী মো. সোহেল বলেন, আমার স্ত্রীকে সিজারিয়ান অপারেশন করানোর জন্য উপশম হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সকালে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলে। এদিন বিকেল ৩টায় তার সিজার হওয়ার কথা ছিল। ভর্তির পর তাকে শুধু একটা স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। হাসপাতালের লোকজন বিকেলে চিকিৎসক আসার কথা জানিয়ে দেন। রাত ৮টার দিকে আমার স্ত্রীকে সিরারিয়ান অপারেশনর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর রোগী জ্ঞান হারায়। এ অবস্থায় মুক্তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক শঙ্কর কুমার বসাক।  

তিনি আরও বলেন, এসময় আমার স্ত্রী মৃতই ছিল বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু চিকিৎসক বলছেন, রোগী জীবিত আছেন। আমি আমার স্ত্রীকে পাশের সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরই তাকে মডেল হসপিটালে নিয়ে গেলে সেখানেও মৃত বলে জানায়।  

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকের অবহেলায় তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, সময় মতো সিজারিয়ান অপারেশন করানো হলে আমার স্ত্রী বেঁচে যেত। আমার দুটি সন্তান এতিম হয়ে গেল। আমি এর উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।  

অভিযুক্ত চিকিৎসক শঙ্কর কুমার বসাক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সব নিয়ম অনুসরণ করেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। রোগীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়।  

ঘটনার পর সেখানে শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শন করতে এলেও তিনি আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেননি। তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।  

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।  

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পুরোনো। এর আগেও ভুল চিকিৎসার কারণে একাধিক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে সব ঘটনাই অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে ফেলা হয়।  

বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।