ঢাকা, বুধবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২২ মে ২০২৪, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ধোবাউড়ায় প্রতি দলিলে সমিতি নেয় ১০ হাজার, সাব-রেজিস্ট্রার ৪!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
ধোবাউড়ায় প্রতি দলিলে সমিতি নেয় ১০ হাজার, সাব-রেজিস্ট্রার ৪!

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ বিশ্বাস বাবুল।  

তিনি বলেন, দলিল লেখকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।

এতে জমি দাতা ও গ্রহিতার কাছ থেকে দলিল প্রতি সংশিষ্ট দলিল লেখক সমিতির নামে ১০ হাজার এবং সাব-রেজিস্ট্রারের নামে চার হাজার করে টাকা সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে আদায় করা হচ্ছে।  

এক্ষেত্রে কোনো দলিল লেখক এই অতিরিক্ত টাকা দিতে না চাইলে সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিব সংশিষ্ট দলিল লেখক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম খান বিপ্লব ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুসের মাধ্যমে জোরপূর্বক আদায় করেন। এতে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।

সোমবার (২৫ জুলাই) উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন প্রিয়তোষ বিশ্বাস বাবুল।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শওকত ওসমান, সাবেক সহ সভাপতি অধ্যাপক আশিস হোড়, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলী মাসুদ খান স্বপন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ খান প্রমুখ।

জানা যায়, বর্তমানে ধোবাউড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকের সংখ্যা ১০৬ জন। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতা রয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ জন।  

বর্তমান দলিল লেখক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম খান বিপ্লব ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কদ্দুস উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও বর্তমান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি।  

ফলে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিপ্লব-কদ্দুস সিন্ডিকেট দলিল লেখক সমিতির পদ ভাগিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের নেশায় এসব করছেন বলে অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখকের।  

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দলিল লেখক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম খান বিপ্লব। তিনি বলেন, দলিল প্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ মিথ্যা। মূলত আমি এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বর্তমান সংসদ সদস্যের (জুয়েল আরেং) গ্রুপ করি। আর প্রিয়তোষ বিশ্বাস বাবুল প্রতিপক্ষ গ্রুপ। ফলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তিনি এসব মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করছেন।  

এ বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবিব বলেন, গত অক্টোবরে আমি এই অফিসে যোগদান করে সেবা গ্রহিতাদের অবগতির জন্য সরকার নির্ধারিত ফি উল্লেখ করে একাধিক ব্যানার টানিয়েছি। যাতে কেউ দলিল লিখতে এসে অতিরিক্ত টাকা না দেয়।  

অথচ আমাকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, বিষয়টি বিব্রতকর এবং দুঃখজনক। আমি কোনো ধরনের অনৈতিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নই।

মূলত দলিল লেখক সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ আছে বলে শুনেছি। ফলে ওই সব কারণে আওয়ামী লীগ নেতা প্রিয়তোষ বিশ্বাস বাবুল এই সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন।  

তবে এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য ইতোমধ্যে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।