ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি প্রবাহ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২২
বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি প্রবাহ

লালমনিরহাট: ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সোমবার (১ আগস্ট) বিকেল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮৫ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০মিটার) বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

একই দিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকেল ৩টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে তিস্তার পানি প্রবাহ। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পানি আরও বেড়ে ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষ বাংলানিউজকে জানান, গত দুই দিন থেকে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। সোমবার সকালে আরও বাড়তে থাকে নদীর পানি প্রবাহ। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। বিকেল ৩টার দিকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। ফলে নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।

নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে সদ্য রোপণ করা আমন ধানের ক্ষেত।

পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ওয়াবদা বাঁধগুলো রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। গত অর্থ বছরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নামমাত্র সংস্কার করলেও বর্ষার বৃষ্টিতে অধিকাংশ স্থানে ধসে গেছে। ফলে নদীতে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাঁধগুলোর স্থায়িত্ব নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

মহিষখোচা এলাকার মনতাসির রহমান জানান, ওয়াবদা বাঁধ নামমাত্র সংস্কার করলেও তা বৃষ্টির পানিতে ধসে যাচ্ছে। এছাড়াও যে পরিমাণ প্রশ্বস্ত করার কথা ছিল তার এক চতুর্থাংশও করা হয়নি। ফলে বন্যায় পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওয়াবদা ভেঙে গেলে বন্যা কবলিতদের সংখ্যা বাড়বে কয়েকগুণ।

দলদিবাড়ি চরের মনসুর উদ্দিন বলেন, সকাল থেকে তিস্তার পানি বাড়ছে। দুপুরের পর থেকে বাড়িতে পানি উঠতে শুরু করেছে। এখন চরাঞ্চলের অনেক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ পয়েন্টে তিস্তার পানি সকাল ৬টা থেকে বিপৎসীমার কাছাকাছি থাকলেও বিকেল ৩টায় তা অতিক্রম করে এবং সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।