ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নতুন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জামায়াতের সংযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
নতুন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জামায়াতের সংযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে

ঢাকা: জামায়াতের সঙ্গে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র কোনো সংযোগ বা যোগাযোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

এর আগে বুধবার (৯ নভেম্বর) সিলেট থেকে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে জামায়াত আমীরের ছেলে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে গ্রেফতারের বিষয় জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

গ্রেফতার ডা. রাফাত চৌধুরী নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছিলেন বলে জানায় সিটিটিসি।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. রাফাত জামায়াত আমীরের ছেলে। পিতার সংগঠনের কোনো নির্দেশনা ছিল কি-না বা তাদের দ্বারা নির্দেশিত হয়ে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত হয়েছেন কিনা তা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা হবে।

আসাদুজ্জামান বলেন, ১ নভেম্বর রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সেজাদুল ইসলাম সাহাব তানিম ওরফে ইসা ওরফে আরাফাত ওরফে আনোয়ার (২৪), মো. জাহিদ হাসান ভূঁইয়া (২১) ও সৈয়দ রিয়াজ আহমদ (২২) নামে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সিলেট থেকে হিজরত করেছিলেন।

বাংলাদেশে সম্প্রতি যতো যুবক হিজরত করেছেন এরমধ্যে সিলেটে বেশি। হিজরতকালীন মাস্টারমাইন্ড ডাক্তার রাফাত।

ডাক্তার রাফাত একটি মেডিকেল থেকে এমবিবিএস পাশ করে ইন্টার্নি করছিলেন। তাকে আমরা গ্রেফতার করেছি। পূর্বে গ্রেফতার তানিম, আনবির ও জাহিদের দেওয়া জবানবন্দিতে উঠে এসেছে, তিন যুবকসহ যারাই সিলেট থেকে হিজরত করেছেন, এর নেপথ্যে মূল ব্যক্তি ছিলেন ডাক্তার রাফাত।

ডাক্তার রাফাতের নেতৃত্বেই ২০২১ সালের জুন মাসে ১১ যুবক সিলেট থেকে হিজরত করেন। তখন তা বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। তারা বান্দরবানে যান, কোনো কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তারা সাতদিন পর সিলেটে ফিরে আসেন। কিন্তু তারা তৎপরতা বন্ধ রাখেননি।

সিলেট অঞ্চল থেকে যেসব যুবক হিজরত করেছেন তাদের প্রভাবিত করা, দাওয়াত দেওয়া, হিজরতে উদ্বুদ্ধ ও প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন ডা. রাফাত।

কুমিল্লার ঘটনার পর নতুন জঙ্গি সংগঠনের নাম উঠে আসে। এরপর সিটিটিসিসহ অন্যান্য বাহিনী ব্যাপক অভিযান শুরু করলে তারা পালিয়ে থাকেন।  

এরপর তারা আবার সিলেট থেকে হিজরতের প্রস্তুতি নেন। ১ নভেম্বরে গ্রেফতার তানিম, আনোয়ার ও জাহিদের আরও অনেককে নিয়ে পুনরায় বড় রকমের হিজরতের কথা ছিল। তবে তাদের দেওয়া তথ্যে ডা. রাফাতকে গ্রেফতার করা হয়।  

আসাদুজ্জামান বলেন, ডা. রাফাত দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলের যুবকদের জিহাদ ও জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ, প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।  

তারা বেশ কয়েকজন জিহাদে উদ্বুদ্ধ যুবককে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং প্রশিক্ষণের সক্ষমতাও তারা যাচাই করেছেন। আমরা সেই বোমা বানানো কারিগরকে শনাক্ত করেছি। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

হিজরত করতে প্রস্তুত সিলেট অঞ্চলের আরও বেশ কয়েকজন যুবককে আমরা শনাক্ত করেছি। হিজরতের আগেই আমরা মাস্টারমাইন্ড ডা. রাফাতকে গ্রেফতার করেছি। তাকে আদালতে রিমান্ড চেয়ে পাঠিয়েছি। রিমান্ডে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো, সংগঠনের ভব্যিষত পরিকল্পনা ও সিলেটে তাদের পরিকল্পনা জানতে পারবো।

ডা. রাফাতের সঙ্গে জামায়াত বা শিবিরে কোনো যোগাযোগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে এই কমকর্তা বলেন, এক সময় শিবির করেছেন ডা. রাফাত। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে তার যে গোপন যোগাযোগ তা খতিয়ে দেখছি।

নতুন জঙ্গি সংগঠনের অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের মতো হামলা-নাশকতার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই সংগঠনের মাস্টারমাইন্ড শামীন মাহফুজ, তার সহযোগী তমাল। তাদের গ্রেফতার করা গেলে এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানা যাবে।

জঙ্গি সংগঠন মানেই শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা থাকে। সেই লক্ষ্যে তারা হামলা করে। তবে এই নতুন জঙ্গি সংগঠন এ পর্যন্ত যেতে পারেনি। প্রস্তুতি পর্বেই আমরা তাদের থামিয়ে দিতে পেরেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
পিএম/এসআইএস  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।