ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি উপ-কমিটির সদস্য দুরন্ত বিপ্লব হত্যাকাণ্ডের ‘রহস্য উন্মোচন’ না হওয়ার ক্ষোভ জানিয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতারা। এ সময় তারা দুরন্ত বিপ্লবের হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টাকারীদের শাস্তি দাবি করেছেন।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের ব্যানারে এ দাবি জানানো হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন সৈকত বলেন, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তাকে এভাবে চলে যেতে হবে আমরা প্রত্যাশা করিনি। দুরন্ত বিপ্লবের কোনো শত্রু থাকতে পারে না, সৃষ্টি হতে পারে না। তার খুনিদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর মেহেদী জামিল বলেন, আমাদের শ্রদ্ধাভাজন বড়ভাই দুরন্ত বিপ্লব সংস্কৃতিমনা মানুষ। সংস্কৃতিমনা মানুষের শত্রু থাকে না, একমাত্র শত্রু থাকতে পারে মৌলবাদী মানুষরা। দুরন্ত বিপ্লব কৃষি নিয়ে ভাবতেন। উন্নত চিন্তাধারা থেকে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে দুরন্ত দা স্বপ্ন দেখেছেন কৃষককে নিয়ে।
নৌকাডুবি নিয়ে পুলিশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্রনেতা বলেন, নিখোঁজ হওয়ার সময় নৌকাডুবির কথা বলা হয়নি। মৃত্যুর পরে জানানো হলো যে নৌকাডুবি হয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, দুরন্ত বিপ্লব একজন পরিপূর্ণ প্রগতিশীল মানুষ। দুরন্ত বিপ্লব হত্যা, বুয়েটের ফারদিন হত্যা একটি যড়যন্ত্র। প্রশাসনের যারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। প্রশাসনকে বলবো, দেশের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ এগিয়ে চলেছে সেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে দুরন্ত বিপ্লব হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর ও বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আশীষ কুমার মজুমদার বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে এসেছে দুরন্ত বিপ্লবকে হত্যা করে বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, আপনি প্রশাসনকে সঠিক তদন্ত করতে নির্দেশ দিন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের আহ্বায়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আলী রতন বলেন, দুরন্ত বিপ্লব নিখোঁজ হওয়ার তার পরিবার যখন জিডি করতে থানায় গেল তখন কোনো পুলিশ গুরুত্ব দিল না। তার মতো নেতা নিখোঁজ হওয়ার পরেও খুঁজে পেল না। খুঁজে পেল লাশ। তখন বলছে নৌকাডুবি। এরপর নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আপনার কর্মী হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা হল ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মিতু বলেন, এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। দুরন্ত বিপ্লবের কোনো শত্রু ছিল না।
নিহতের ভগ্নিপতি ও জাবি ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রনেতা ইমরুল খান বলেন, নির্বিকার, নির্বিবাদী মানুষ ছিলেন দুরন্ত বিপ্লব। তার হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২২
এনবি/আরবি