ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

আমিরাতে ভিসা বন্ধে দূতাবাসের উদাসীনতা দায়ী নয় কি?

শাহরীয়ার আহম্মেদ অক্ষর, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১২
আমিরাতে ভিসা বন্ধে দূতাবাসের উদাসীনতা দায়ী নয় কি?

আবুধাবী: সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বসবাস করছি গত প্রায় চারটি বছর ধরে। এখানকার সব আইন সম্পর্কে অবগত না হলেও বেশ কিছু নিয়মকানুনের ব্যাপারে অবগত আছি।



গত প্রায় আট মাস ধরে ক্রমাগত একটার পর একটা লেখা পাঠিয়েছি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে এবং তারা প্রকাশও করেছে। লেখায় বারবার উল্লেখ করেছি যে, ভিসা বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশিদের জন্য, অবশেষে গত ঈদুল ফিতরের সময় থেকে আনঅফিসিয়ালি ভিসা ইস্যু বন্ধ ছিল। কিন্তু গত ৪ অক্টোবর অফিসিয়ালি ঘোষণা আসে ভিসা বন্ধের।

আরব আমিরাত সরকার ‍বাংলাদেশের সরকারকে ঈদুল ফিতর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে দিয়েছিল। এসময়ের মধ্যে আমিরাতের সরকার আশা করেছিল, আমাদের দেশের সরকারি পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার জন্য প্রস্তাব আসবে। কিন্তু প্রস্তাব আসেনি, আমাদের দূতাবাসের মহামান্য অধিকর্তারা অন্ধকারেই রেখেছেন সরকারের কর্তাব্যক্তিদের। আর ভিসা বন্ধের খবরটি এখানকার মিডিয়াতে এমন ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে যে, তা প্রকাশ করার ভাষা আমার জানা নেই।

অফিসিয়াল ঘোষণা আসার পরে পুরো কমিউনিটিতে এক প্রকার আতংক বিরাজ করছে। এ দেশের সরকার যে সব কারণ দেখিয়ে ভিসা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে, সে সব অপরাধের সঙ্গে যে শুধুমাত্র বাংলাদেশিরা জড়িত বিষয়টা এমন নয়--এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে হাজারগুণ বেশি জড়িত ভারতীয় ও পাকিস্তানিরা। কিন্তু তাদের মিডিয়া তাদের দূতাবাস এতটাই শক্তিশালী যে, এসব খবর আরব আমিরাত সরকারের কাছে পৌঁছাতেই পারে না।

আজকাল টকশোতে দেখা যায় প্রবাসীকল্যাণ সচিবকে, আর তার মুখ থেকে একটি কথা শোনা যায়, তা হলো: বাংলাদেশি জনশক্তির পরিমাণ বেশি হয়ে যাওয়াই ভিসা বন্ধের অন্যতম কারণ! প্রবাসীকল্যাণ সচিবের কাছে প্রশ্ন, আপনার কাছে পরিসংখ্যান আছে কি? আরব আমিরাতে সর্বমোট কত লাখ ভারতীয় ও পাকিস্তানি রয়েছে? আরব আমিরাত চেয়ে রেমিট্যান্সের কত শতাংশ বাংলাদেশিরা ট্রান্সফার করে? আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এ ব্যাপারে আমাদের সচিবদের কাছে কোনো তথ্যই নাই। শুধু বলার কথা বলে দিচ্ছেন “আমরা সংখ্যায় বেশি আর সমান্তরাল করার জন্যই ভিসা বন্ধ। ”
 
যদি তার সঙ্গে একমতও হয় যে, আমরা সংখ্যায় বেশি কিন্তু কোন ক্যাটাগরিতে? সমান্তরালেরর প্রশ্ন যখন আসে তখন কেন আমাদের দেশের কর্তব্যক্তিরা তুলে ধরেন না যে, রেমিট্যান্সের দিক দিয়ে তো আমরা ৭৫ শতাংশ পিছিয়ে। আমাদের দূতাবাসে জনবলের অভাব রয়েছে, এ কথা যেমন সত্য তেমনি সমস্যা সমাধানে কোনো প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়াও আমাদের দূতাবাস কর্মচারীদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

জানি এ লেখার কোনো প্রতিফলন ঘটবে না দূতাবাস কর্মচারীদের মধ্যে। তবু লিখলাম হয় তো একদিন তাদের ঘুম ভাঙবে, হয়তো একদিন তারা আমাদের জন্য কিছু একটা করবেন, হয় তো একদিন সব সমস্যার সমাধান হবে।
 
লেখক: সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী,
যোগাযোগ: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১২
সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।