ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

শফী সাহেবের সংশোধন জরুরি

মাহবুব আলম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৩
শফী সাহেবের সংশোধন জরুরি

আল্লাহর রাসুল ছিলেন মিষ্টভাষী। তার ভাষা ছিল পরিশীলিত।

তার অনুসারী হিসেবে একজন আলেমও কথা বলবেন কোরআন ও সুন্নাহ মেনে। কিন্তু আহমদ শফী সাহেবের কথা শ্লীলতাবর্জিত। এটি সুন্নাতের অনুকুল নয়।

আর যে আলেমের কথা সুন্নাহ অনুসারে হয় না, সুন্নাহের অনুকুলে থাকে না- তাকে কি আমাদের ‘ঈমাম’ মানা উচিৎ?

আহমদ শফীর মতে, নারীর পাশে গেলেই কোনো পুরুষ ‘উত্তেজিত’ হয়ে পড়বে- এই মত কি কোরআন ও হাদিস সমর্থিত?

ইসলামে ‘উত্তেজনার’ হালাল ও হারাম ক্ষেত্র আছে। যেমন আছে খাদ্যে, পানীয়ে,  কাপড়ে, ব্যবসা-বাণিজ্যে, অন্য সব ক্ষেত্রে। একজন ইমানদার ‘উত্তেজিত’ হন শুধুই হালাল স্ত্রী’র প্রতি, বাকি সব নারী তার কাছে বোনের মত।
বিদেশে গেলে ঈমানদাররা যত্রতত্র ইসলামের চোখে হারাম খাদ্য ও পানীয় দেখে কি লালায়িত হয়ে পড়ে? যদি হয়, অবশ্যই ওই ঈমানদার কোরআন ও সুন্নাহের বিপরীতে চলছেন। তওবা করে তার নিজেকে সংশোধন করা জরুরি। সংশোধন করা দরকার আহমদ শফীর নিজেকেও।

কোরআন শরীফে মুসা (আ.) ও সুয়াইব (আ.) এর কন্যাদের অধ্যায় দেখুন, আল্লাহর রাসুলের (সা.) জীবনী দেখুন, ইমাম আবু হানিফার (র.) জীবনী দেখুন, এরুপ আরো হাজার হাজার উদাহরণ আছে, যেগুলোতে ইমানদার পুরুষ ও নারী একসঙ্গে চলেছেন, কিন্তু ‘উত্তেজিত’ হন নি।

জীবনের নানা প্রয়োজনে একজন নারী কোনো প্রতিবেশী পুরুষ বা অপরিচিত পুরুষের সাহায্য চাইতে পারেন, তাই বলে সেই পুরষ কি ‘উত্তেজিত’ হয়ে যাবে? না হলে কি সে ‘বিশেষ’ রোগের রোগী?

শফী সাহেব, আপনার দৃষ্টিভঙ্গী অসুস্থ, সুন্নাহের বিপরীত। আর আমরা অত্যন্ত বিরক্ত ও চিন্তিত যে, কিছু মানুষ আপনার এই অসুস্থ চিন্তাকেই ইসলাম মনে করছে। সুন্নাতের প্রতিকুল এই আকিদা (ধারণা) আপনি কিভাবে ধারণ করেন?

বাংলাদেশের বহু নারী পেটের দায়ে, দু’বেলা খাওয়ার জন্য বিভিন্ন কাজ করছে ও আয় করছে। নিজে বেঁচে আছে, পরিবারকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এই জীবনসংগ্রামী নারীদের আপনি কিভাবে ‘জেনাকারী’ অপবাদ দিলেন?

শরিয়তে জেনার অপবাদের হুকুম কি মনে করুন তো। হয় আপনাকে জেনার অপবাদ প্রমাণ করতে হবে, নতুবা আপনার উপর ৮০ বেত্রাঘাত শাস্তি জারির হুকুম আছে।

আপনার কথা আপনি কোরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে প্রমাণ করবেন, বিজ্ঞানের দিকে যান কেন? কোরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে কি কোনো দলিল নেই?

আপনারাই সেই আলেম যাদের রাসুল (সা.) বর্ণনা করেছেন, ‘শরীরে কোরআন অংকিত পাখি বিশেষ, কিন্তু বিষ্ঠা খায়’। ধিক আপনাদেরকে! ধিক আপনার জ্ঞানকে!!

এখনও সময় আছে তওবা পড়ুন। নিশ্চয় আল্লাহ তা`লা খাঁটি তওবাকারীকে মাফ করেন।

mahbub

মাহবুব আলম: লেখক, প্রফেশনাল একাউনটেন্ট, সফটওয়্যার ব্যবসায়ী,  [email protected]

 

 

  বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৩
জেডএম/জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।